Ads Area


সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || ভানুসিংহের (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) পত্রাবলি প্রশ্ন ও উত্তর || Bhanusinhera patrabali Questions

ভানুসিংহের পত্রাবলি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

প্রিয় ছাত্র ছাত্রী,

 আজ তোমাদের জন্য সপ্তম শ্রেণীর বাংলা বই থেকে ভানুসিংহের পত্রাবলি রয়েছে। পাঠ্যাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা চিথিপত্রের সংকলন ভানুসিংহের পত্রাবলি, তাই এই পত্রাবলি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর তোমাদের শেয়ার করলাম। আশা করি তোমাদের ভালো লাগবে।

সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || ভানুসিংহের পত্রাবলি প্রশ্ন ও উত্তর || Bhanusinhera patrabali Questions And Answers


সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || ভানুসিংহের পত্রাবলি প্রশ্ন ও উত্তর || Bhanusinhera patrabali Questions And Answers


১) বর্ষামঙ্গল (আষাঢ়/অগ্রহায়ণ/শ্রাবণ) মাসে অনুষ্ঠিত হয়।

উত্তর: শ্রাবণ।

২) শান্তিনিকেতন (বীরভূম/বাঁকুড়া/পুরুলিয়া) জেলায় অবস্থিত।

উত্তর: বীরভূম।

৩) কবি (আত্রাই/পদ্মা/শিলাবতী) নদীর ওপর বোটে করে ভেসে চলেছেন।

উত্তর: আত্রাই। 

৪) পৃথিবীর মনের কথাটি কবি শুনতে পান (জলের ওপর/নদীর ওপর/মাটির ওপর)।

উত্তর: নদীর ওপর।

৫) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি পত্রসাহিত্যের উদাহরণ হল (শেষের কবিতা/গীতাঞ্জলি/ছিন্নপত্র)।

উত্তর: ছিন্নপত্র।

৬)"কলকাতা শহরটা আমি মোটেই পছন্দ করিনে।"-কবির এই অপছন্দের কারণ কী?

উত্তর: কবি রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্রকৃতিপ্রেমী। শহর কলকাতায় খোলামেলা প্রকৃতিকে তিনি কিছুতেই খুঁজে পেতেন না। কলকাতায় থাকলে রবীন্দ্রনাথের মনে হত যেন ইষ্ট-কাঠের একটা মন্ত জন্তু তাঁকে একেবারে গিলে ফেলেছে। কলকাতা শহরের বর্ষার রূপকে কবি একেবারেই পছন্দ কবতেন না। কলকাতার বর্ষার মধ্যে বর্ষার গান, তার নৃত্যময় রূপ, সবুজের বিস্তার কোনো কিছুই নেই। তাই সব মিলিয়ে কলকাতা শহরটাকে রবীন্দ্রনাথ একেবারেই পছন্দ করতেন না।

৭) "সে গান কি কলকাতা শহরের হাটে জমবে।'-কোন্ গানের কথা বলা হয়েছে? সে গান কলকাতার হাটে জমবে না-কবির এমন ভাবনা কেন?

উত্তর: প্রশ্নে আলোচিত গদ্যাংশে বর্ষামঙ্গল গানের কথা বলা হয়েছে। বর্ষা ঋতুকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠানে যে গান গাওয়া হয়, তা-ই হল বর্ষামঙ্গল। অথচ বর্ষায় পল্লিবাংলার সর্বত্র যে রূপের প্রকাশ ঘটে, কলকাতায় সেই সমুন্নত রূপটিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। শান্তিনিকেতনের বর্ষার আবহে তৈরি বর্ষামঙ্গল গান কলকাতার ব্যস্ত, হট্টগোলে পরিপূর্ণ জীবনে কতটা জনপ্রিয় হবে বা আদৌ হবে কি না-সেই সংশয়ই প্রকাশ পেয়েছে কবির এই ভাবনায়।

৮) "তোমাদের ওখানে এতদিনে বোধহয় বর্ষা নেমেছে।"-কার উদ্দেশে কবি একথা লিখেছেন? 'ওখানে' বলতে কোন্ জায়গার কথা বলা হয়েছে?

 উত্তর: কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপক ফণিভূষণ অধিকারীর কিশোরী কন্যা রাণু অধিকারীর উদ্দেশে কবি একথা লিখেছেন।

'ওখানে' বলতে শান্তিনিকেতনের কথা বলা হয়েছে। 

৯) "শান্তিনিকেতনের মাঠে যখন বৃষ্টি নামে..."-তখন কবির কেমন অনুভূতি হয়?

উত্তর: শান্তিনিকেতনের মাঠে যখন বৃষ্টি নামে তখন তার ছায়ায় আকাশের আলো করুণ হয়ে আসে, ঘাসে ঘাসে পুলক লাগে। গাছগুলো যেন 'কথা কইতে চায়', এই পরিবেশে সাড়া দিয়ে কবির মনের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গান জেগে ওঠে। সেই গানই হল বর্ষামঙ্গলের গান।

১০) "আজ সকালেই সে পালাবে স্থির করেছে"-'আজ' বলতে যে দিনটার কথা বলা হয়েছে তার সাল ও তারিখ কত? 'সে' বলতে কার কথা বলা হয়েছে? সে কোথায় পালাবে এবং কেন? 

উত্তর: 'আজ' বলতে যে দিনটার কথা বলা হয়েছে সেই দিনটার তারিখ ২৯ আষাঢ়, ১৩২৯ বঙ্গাব্দ।

 'সে' বলতে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা বলা হয়েছে।রবীন্দ্রনাথ সঠিকভাবেই অনুমান করেছিলেন যে 'সে' অর্থাৎ দিনেন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে পালাবেন। এর কারণ হল, শহর কলকাতার ইট-কাঠে ভরা দমবন্ধ করা পরিবেশ দিনেন্দ্রনাথের একেবারেই ভালো লাগত না। 

১১) "সমস্তটার ওপর বাদল-সায়াহের ছায়া।"- কবির চোখ দিয়ে দেখে এই 'সমস্তটা'র বর্ণনা দাও।

উত্তর: আত্রাই নদীর ওপরে বোট থেকে কবি রবীন্দ্রনাথ বর্ষাকালের প্রকৃতিকে দেখছেন। দেখছেন, বর্ষার মেঘ ঘন হয়ে আকাশকে ঢেকে দিয়েছে। সঙ্গে ঝোড়ো বাতাস বইছে। সেই বাতাসে নৌকা পাল তুলে দিয়েছে। বর্ষায় খরস্রোতা আত্রাই নদী কূলে কূলে পরিপূর্ণ। শৈবালরাজি দলে দলে সেই স্রোতে ভেসে চলেছে। নদীর পাড়ে যে গ্রামগুলো দেখা যাচ্ছে সেই গ্রামের ঘরগুলোর উঠোন অবধি জল উঠেছে। গ্রামের মধ্যে রয়েছে ঘন বাঁশের ঝাড় আর আমগাছ, কাঁঠাল গাছ, তেঁতুল গাছ, কুল গাছ, শিমূল গাছ।

 বোট থেকে এইসব গাছ দেখে কবির মনে হয়েছে এই গাছগুলো যেন গ্রামটাকে তারে ঢেকে রয়েছে। মাঝে মাঝে নদীর তীরে কাঁচা ধানের খেতে জল উঠেছে। সেই হন্দ কচি ধানগাছগুলো জলের ওপরে মাথা তুলে রয়েছে। এ ছাড়াও নদীর দুই জর তীরে ঘন সবুজের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। তারই মাঝখান দিয়ে আত্মাই নদী নাথ তার গেরুয়া রঙের জলধারা বয়ে নিয়ে চলেছে অত্যন্ত ব্যস্ততার সঙ্গে। আর বৃষ্টিভেজা এই পরিবেশের ওপর সন্ধ্যার ছায়া নামছে একটু একটু করে।

১২)"কলকাতায় না এলে আরো জমতা|'-কী জমত? কবির কলকাতায় আসার সঙ্গে তা না জমে ওঠার সম্পর্ক কী?

উত্তর: কলকাতায় না এলে কবি রবীন্দ্রনাথের গানের খাতায় আরও গান জমে উঠত।

কবি যখন শান্তিনিকেতনে থাকতেন, তখন সেখানকার প্রকৃতির সঙ্গে টি, তিনি আন্তরিকভাবে একাত্ম হয়ে পড়তেন। শাস্তিনিকেতনে যখন বৃষ্টি নামত এর তখন কবি অনুভব করতেন সেই বৃষ্টির ছায়ায় আকাশের আলো করুপ হয়ে আসে। এই পরিবেশে ঘাসের মধ্যেও বৃষ্টির আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। গাছগুলো যেন বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ার আনন্দে শামিল হয়ে কথা বলার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এই সময় কবির মনেও জেগে উঠত বর্ষামঙ্গলের গান। শহর কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনের মতো বর্ষাসুন্দরীকে খুঁজে পান না, তাই তখন তাঁর মনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গান জেগে ওঠে না। সেই জন্যই কবি ব বলেছিলেন, বর্ষাকালে কলকাতায় না এসে তিনি যদি শান্তিনিকেতনেই থাকতেন তাহলে তাঁর গানের খাতায় আরও বেশি গান জমে উঠত।

১৩) "খাতার দিকে চোখ রাখবার এখন সময় নয়।"-কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে? খাতার দিকে চোখ রাখবার সময় কবির নেই কেন?

উত্তর: কবি এক বর্ষাভেজা গোধূলি বেলায় আত্রাই নদীর ওপর বোটে করে ভেসে চলেছেন। প্রকৃতির সঙ্গে কবির একাত্ম হয়ে ওঠার সেই সময়ের কথাই - এখানে বলা হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ আত্রাই নদীর ওপরে বোট থেকে বর্ষায় ভেজা চারপাশের পরিবেশকে দেখছিলেন। বোটের ওপরে এসে কবির মনে হয়েছিল পৃথিবীর মনের কথাটি তিনি যেন শুনতে পাচ্ছেন। একদিকে নদী, অন্যদিকে আকাশ-এই দুইয়ের রঙে, আলোছায়ায় মেশা অভূতপূর্ব সৌন্দর্যকে কবি মুগ্ধ হয়ে দেখতে ভালোবাসতেন। তাই তিনি বোটের ওপর থেকে দুচোখ ভরে আকাশ আর নদীর সৌন্দর্য দেখে নিতে চাইছিলেন। সেই কারণে সেই মুহূর্তে তাঁর মন খাতার দিকে ছিল না।

১৪)"আমার মনের মধ্যে গান জেগে ওঠে আর তার সুর গিয়ে পৌঁছায় দিনুর ঘরে।” -এই বাক্যে উল্লিখিত 'দিনু'র পরিচয় দাও।

উত্তর: প্রশ্নোক্ত অংশে উল্লিখিত 'দিনু' হলেন রবীন্দ্রনাথের বড়ো দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথের পৌত্র, সেই অর্থে তিনি রবীন্দ্রনাথেরও নাতি।

১৫) দিনুবাবুর পুরো নাম কী?

উত্তর: দিনুবাবুর পুরো নাম ছিল দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৬) শান্তিনিকেতনের মাঠে বৃষ্টি নামলে প্রকৃতির রূপ কেমন হয়? 

উত্তর: শান্তিনিকেতনে বৃষ্টি নামলে তার ছায়ায় আকাশের আলো করুণ হয়ে আসে, ঘাসে পুলক লাগে, গাছগুলো কথা বলতে চায়।

১৭) শান্তিনিকেতনের মতো কলকাতায় বর্ষার নৃত্য-গান কেন দেখা যায় না?

 উত্তর: কলকাতায় বর্ষার নৃত্য-গীত দেখা যায় না কারণ এখানে নববর্ষা বাড়ির ছাদে ঠোকর খেয়ে খোঁড়া হয়ে পড়ে।

১৮) "কলকাতায় বর্ষামঙ্গল গান হবে"- কোন্ মাসে বর্ষামঙ্গল গান হবে?

উত্তর: শ্রাবণ মাসে 'বর্ষামঙ্গল' গান হবে।

১৯) কলকাতার বর্ষামঙ্গল গান নিয়ে কবি কী ভেবেছেন?

উত্তর: কবির মতে শান্তিনিকেতনের মাঠে তৈরি বর্ষামঙ্গল গান এ কলকাতার হাটে ঠিক জমবে না।

২০) 'ভানুসিংহ' কার ছদ্মনাম?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম হল 'ভানুসিংহ'।

২১) "... কোথায় তার নৃত্য," -উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য কী?

উত্তর: লেখকের মতে শান্তিনিকেতনের খোলা মাঠে যখন বৃষ্টি নামে তখন তাকে বাধা দেওয়ার মতো কোনো ইট কাঠের বাড়ি থাকে না। তাই মুক্ত বৃষ্টিধারার তালে তালে ঘাসের দল, গাছপালা এবং সমগ্র প্রকৃতি যেন নৃত্য করে বলে তিনি মনে করেন।

২২) “কিন্তু এখানকার বৈঠকখানায় সেই গানের সুর ঠিক মতো বাজে না।” -কেন লেখক এ কথা বলেছেন?

উত্তর: শহর কলকাতায় নববর্ষাকে ইট-কাঠের জঙ্গলে প্রকৃতভাবে অনুভব করা যায় না। বর্ষা এখানে 'বাড়ির ছাদে ঠোকর খেতে খেতে খোঁড়া হয়ে পড়ে', তার নৃত্যচপলতা, সংগীতমুখরতা, সবুজের বিস্তার কোনো কিছুই কলকাতা শহরে পাওয়া যায় না। তাই রবীন্দ্রনাথ মনে করেছেন যে, বর্ষার গান এই শহরের বৈঠকখানায় ভালো জমবে না।

২৩) "মনে হয় যেন ইট-কাঠের একটা মস্ত জন্তু আমাকে একেবারে গিলে ফেলেচে।” -লেখক ইট কাঠের জন্তুর সঙ্গে কার তুলনা করেছেন? তাঁর এরকম ভাবনার কারণ কী? 

উত্তর: লেখক ইট কাঠের জন্তুর সঙ্গে কলকাতা শহরের তুলনা করেছেন।

বর্ষার আগমনে লেখকের এ কথা মনে হয়েছিল। শান্তিনিকেতনের মাঠে যখন বৃষ্টি নামত তখন প্রকৃতির মধ্যে আনন্দ আর প্রাণের সঞ্চার ঘটত। তার সঙ্গে কবির মনের মধ্যেও গান জেগে উঠত। কিন্তু শহর কলকাতায় বর্ষার প্রবেশ দুর্গম। নববর্ষা এখানে বাড়ির ছাদে ঠোকর খেয়ে খোঁড়া হয়ে পড়ে। তার নৃত্য, গান, প্রকৃতিতে সবুজের বিস্তার কোনো কিছুই কলকাতায় দেখা যায় না। তাই নববর্ষার আগমনে লেখক এই শহর কলকাতার প্রতি তাঁর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

২৪)"আর এখানে নববর্ষা বাড়ির ছাদে ঠোকর খেতে খেতে খোঁড়া হয়ে পড়ে” -কলকাতা সম্পর্কে লেখকের এই মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: কলকাতা শহরটিকে লেখক রবীন্দ্রনাথ একেবারেই পছন্দ করতেন না। ইট-কাঠের এই শহরকে লেখকের এক মস্ত জন্তু বলে মনে হয়। বর্ষা এখানে নিজেকে মেলে ধরতে পারে না। অজস্র মানুষের চিৎকার চেঁচামেচি আর ব্যস্ততায় কলকাতা যেন এক 'হাট'-এর চেহারা নেয়। তাই শান্তিনিকেতনের মাঠে যে বর্ষামঙ্গল গান জমে ওঠে, তা কলকাতায় জমা সম্ভব নয়। সবুজ ঘাসে যে পুলক, গাছেদের যে সজীবতা শান্তিনিকেতনের খোলা প্রান্তরে পাওয়া যায় তাকে কলকাতায় পাওয়া অসম্ভব। কারণ বৃষ্টি এখানে খোলা মাঠে নয়, কংক্রিটের ছাদে, ঠোকর খেতে খেতে পড়ে। শহরে বর্ষা 'সবুজ রঙের উত্তরীয় পরে', 'পুবে বাতাসের উড়ে পড়া জটাজাল মাথায়' নিয়ে আসার সুযোগ পায় না। তাই কলকাতার বর্ষা লেখকের মনে আনন্দধবনি জাগায় না।

২৫) "বর্ষার মেঘ ঘন হয়ে আকাশ আচ্ছন্ন করেছে..."-কখন লেখক এই ইগুলা দেখেছেন?

উত্তর: আত্রাই নদীর উপর দিয়ে লেখক যখন বোটে করে ভেসে চলছিলেন তখন তিনি এই দৃশ্য দেখেছিলেন। ২৬) "... একটা গান তৈরি করতে ইচ্ছে করছে।"-গানের সৃষ্টির কারণ কী ছিল? 

উত্তর: জলস্থল আকাশের নিভৃত শ্যামলতার সঙ্গে মিলিয়ে কবির গান রালা করতে ইচ্ছে করেছিল।

২৭) "নদী আমি ভারি ভালোবাসি; "-লেখক নদীর কোন্ রূপ ভালোবাসেন?

উত্তর: রঙে, রঙে, আলোছায়ায় আকাশের সঙ্গে নদীর অদ্ভুত মিলন, তা আকাশের প্রতিধ্বনির মতো-তাকেই ভীষণ ভালোবাসেন লেখক।

২৮) "সমস্তটার উপর বাদল-সায়াহের ছায়া।" -কীসের উপরে লেখক এই ছায়া লক্ষ করেছিলেন?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ভানুসিংহের পত্রাবলি' রচনাংশ থেকে গৃহীত। আত্রাই নদীর উপর দিয়ে বোটে ভেসে চলার সময়ে লেখক পরিপূর্ণ নদী আর সংলগ্ন দৃশ্যপট প্রত্যক্ষ করেছিলেন। পল্লির উঠোন পর্যন্ত জল উঠেছে, ঘন বাঁশ-ঝাড়, সঙ্গে আম, কাঁঠাল, তেঁতুল, কুল, শিমুল গাছ। নদীর তীরে কাঁচা ধানের খেতে জল উঠে এসেছে। দুই তীরে সবুজের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে গেরুয়া রঙের নদী। তার উপরেই লেখক বাদল সায়াহের ছায়া লক্ষ করেছিলেন।

২৯) "কিন্তু হয়ে উঠবে না।"- কী হয়ে উঠবে না এবং কেন?

 উত্তর: আত্রাই নদীর ওপর দিয়ে বোটে করে ভেসে যাওয়ার সময় বর্ষার প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে কবির একটি গান লেখার ইচ্ছা হলেও তা হয়ে উঠবে না। তার কারণ চোখ এখন বাইরের দৃশ্যেই মুগ্ধ থাকতে চায়, খাতার দিকে চোখ রাখার সময় সেটা নয়।

৩০) "আত্রাই নামক একটি নদীর উপর বোটে করে ভেসে চলেচি।" -এখান থেকে লেখক প্রকৃতিকে যেভাবে দেখেছিলেন নিজের ভাষায় লেখো।

 উত্তর: আত্রাই নদীতে ভেসে চলার সময়ে আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন এবং ঝোড়ো বাতাস বইছিল। জলে পরিপূর্ণ নদী পল্লির আঙিনা পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। ঘন বাঁশ-ঝাড়ের সঙ্গে আম, কাঁঠাল, তেঁতুল, কুল এবং শিমুল নিবিড় হয়ে গ্রামগুলিকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল। দুই তীরে সবুজ যেন ঘন হয়ে উঠেছিল, জেগে ছিল কচি ধানের মাথা। তার মাঝখান দিয়ে বর্ষার উচ্ছ্বসিত নদীটি গেরুয়া রঙের ধারা বহন করে নিয়ে চলেছিল। সমস্ত দৃশ্যপটের উপরে বাদল-সায়াহের ছায়া পড়েছিল। বৃষ্টিধারার উপরে এসে পড়েছিল সূর্যাস্তের স্নান আভা। লেখকের চোখে এভাবেই প্রকৃতির অনবদ্য চিত্রমালা তৈরি হয়েছে।

৩১) "পৃথিবীর যেন মনের কথাটি শুনতে পাওয়া যাচ্চে।" -কেন লেখকের এরকম উপলব্ধি হয়েছে লেখো।

উত্তর: আত্রাই নদীর উপর দিয়ে বোটে ভেসে চলার সময় দুই তীরের পল্লিপ্রকৃতি লেখকের মন অধিকার করে নেয়। মেঘাচ্ছন্ন আকাশের তলায় জলমগ্ন তটভূমি আর সেখানে সবুজের বিস্তারে কবিমন মুগ্ধ হয়ে ওঠে। সবুজের মধ্যে নদীটি যেন গেরুয়া রঙের ধারা তৈরি করেছে, এই দৃশ্যপটের উপরে নেমে এসেছে বাদল সায়াহের ছায়া। নদী ও আকাশের এই মিলনের মধ্যেই যেন পৃথিবীর মনের কথাটি লেখক শুনতে পান। জলস্থল আকাশের নিবিড় শ্যামলতাই সেই মনের কথার ভাষ্য রচনা করেছে।

আরও পড়ো- 

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area