Ads Area


সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী (কমলা দাশগুপ্ত) প্রশ্ন ও উত্তর || Sbadhinata Sangrame Nari Questions

 স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী 
কমলা দাশগুপ্ত

সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের জন্য আজ আমরা বাংলা বই থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী এই আলোচ্য রচনাটি রয়েছে। এই রচনা থেকে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর দিয়েছি, আলোচ্য রচনাটি কমলা দাশগুপ্ত স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী লেখা। তোমাদের পরীক্ষার জন্য খুবই উপকার হবে। তাই একবার নিচের প্রশ্ন ও উত্তর গুলো দেখে নাও।


সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী (কমলা দাশগুপ্ত) প্রশ্ন ও উত্তর || Sbadhinata Sangrame Nari Questions And Answers


সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী (কমলা দাশগুপ্ত) প্রশ্ন ও উত্তর || Sbadhinata Sangrame Nari Questions And Answers

১) অমরেন্দ্র চ্যাটার্জি কে ছিলেন? 

উত্তর: অমরেন্দ্র চ্যাটার্জি ছিলেন ননীবালা দেবীর ভ্রাতুষ্পুত্র এবং তাঁর বিপ্লবের দীক্ষাগুরু।

২) কার কাছে ননীবালা দেবী বিপ্লবের দীক্ষা পেয়েছিলেন?

 উত্তর: ননীবালা দেবী তাঁর ভাইপো বিপ্লবী অমরেন্দ্র চ্যাটার্জির কাছে বিপ্লবের দীক্ষা পেয়েছিলেন।

৩) চন্দননগরে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল কত সালে?

উত্তর: ১৯১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চন্দননগরে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল।

৪) ননীবালা দেবী কার সাথে পেশোয়ারে পালিয়ে গিয়েছিলেন?

উত্তর: ননীবালা দেবী তাঁর বাল্যবন্ধুর দাদা প্রবোধ মিত্রের সাথে পেশোয়ারে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

৫) কাশীর জেলের 'পানিশমেন্ট সেল'-টি কোথায় অবস্থিত ছিল?

 উত্তর: কাশীর জেলের 'পানিশমেন্ট সেল'-টি প্রাচীরের বাইরে মাটির তলায় অবস্থিত ছিল।

৬) তোমার পাঠ্যাংশে উল্লিখিত চুলিয়াধারী কয়েকজন বিপ্লবীর নাম করো। 

উত্তর: হুলিয়াধারী কয়েকজন বিপ্লবীর নাম হল যাদুগোপাল মুখার্জি, অমর চ্যাটার্জি, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চ্যাটার্জি, নলিনীকান্ত কর, বিনয়ভূষণ দত্ত ও বিজয় চক্রবর্তী।

৭) ননীবালা দেবীকে কাশীর জেলে নিয়ে আসার পর কে তাঁকে জেরা করতেন?

উত্তর: ননীবালা দেবীকে কাশীর জেলে নিয়ে আসার পর কাশীর ডেপুটি পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট জিতেন ব্যানার্জি তাঁকে জেরা করতেন।

৮) কাশী জেল থেকে ননীবালা দেবীকে কোথায় পাঠানো হল?

উত্তর: কাশীর জেল থেকে বন্দি ননীবালা দেবীকে পাঠানো হল কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে।

৯) কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে কে ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন?

উত্তর: কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে আইবি পুলিশের স্পেশাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট গোল্ডি সাহেব ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন।

১০) ননীবালা দেবী কীসের জন্য দরখাস্ত লিখেছিলেন? 

উত্তর: ননীবালা দেবী বাগবাজারে শ্রীরামকৃয় পরমহংসদেবের স্ত্রী সারদামণি দেবীর কাছে তাঁকে থাকতে দেওয়ার অনুমতি প্রার্থনা জানিয়ে দরখাস্ত লিখেছিলেন।

(১১) কত খ্রিস্টাব্দে ননীবালা দেবীর মুক্তির আদেশ এল?

উত্তর: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের এক সকালে ননীবালা দেবীর মুক্তির আদেশ এল।

১২)"সেদিনকার নারী তৈরি করে দিয়ে গেছেন পরবর্তী যুগের বিপ্লবী নারীকে" কোন্ প্রসঙ্গে একথা বলা হয়েছে?

উত্তর: বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদার যখন ইংরেজ পুলিশের দ্বারা গ্রেফতার হন তখন তিনি তাঁর 'মসার' পিস্তলটি কোথায় রেখে গেছেন তা ননীবালা দেবীকে জানাতে ভুলে যান। বিধবা ননীবালা দেবী রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে জেনে আসেন পিস্তলের গুপ্ত খবর। ১৯১৫ সালে পুলিশের শ্যেনদৃষ্টিকে ফাঁকি দিয়ে এই কাজ করা ছিল অত্যন্ত কঠিন। এই প্রসঙ্গেঙ্গই মন্তব্যটি করা হয়েছে।

১৩) "ননীবালা পলাতক হলেন।"-ননীবালা কোথায় কীভাবে পালিয়ে গিয়েছিলেন?

উত্তর: ননীবালা দেবীকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর হয়ে উঠলে তিনি পালিয়ে যেতে উদ্যোগী হন। তাঁর এক বাল্যবন্ধুর দাদা প্রবোধ মিত্র কর্মোপলক্ষ্যে পেশোয়ার যাচ্ছিলেন। সেই বাল্যবন্ধু তাঁকে অনেক অনুনয় করে রাজি করান ননীবালাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে। ননীবালা পলাতক অবস্থায় প্রবোধ মিত্রের সঙ্গে পেশোয়ার যান।

১৪)"বিপ্লবী অমরেন্দ্র চ্যাটার্জির কাছে বিপ্লবের দীক্ষা পেলেন ননীবালা দেবী।" -অমরেন্দ্র চ্যাটার্জির সঙ্গে ননীবালা দেবীর কী সম্পর্ক ছিল? ননীবালা দেবীর বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের কোন্ পরিচয় তুমি পেয়েছ?

উত্তর: বিপ্লবী অমরেন্দ্র চ্যাটার্জি সম্পর্কে ছিলেন ননীবালা দেবীর ভ্রাতুষ্পুত্র।

 ননীবালা দেবী ছিলেন বিপ্লবীদের আশ্রয়দাত্রী। পলাতক বিপ্লবীরা তাঁর বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকতেন। রামচন্দ্র মজুমদার নামে একজন বিপ্লবী গ্রেফতার হওয়ার সময়ে পিস্তল কোথায় লুকিয়ে রেখে গেছেন তা ননীবালা দেবীকে জানিয়ে যেতে ভুলে যান। বিধবা ননীবালা অসাধারণ সাহসের পরিচয় দিয়ে রামবাবুর স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে রামবাবুর সঙ্গে দেখা করেন এবং সেই পিস্তলের খবর জেনে আসেন। একসময় পুলিশের তাঁর ওপর নজর পড়ায় তাঁকে পেশোয়ারে পালিয়ে যেতে হয়। প্রেসিডেন্সি জেলে থাকার সময় আইবি পুলিশের স্পেশাল পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট গোল্ডি তাঁকে অপমান করায় ননীবালা দেবী তাঁকে চড় কষিয়ে দেন। এমনই অসমসাহসী জছিলেন মহীয়সী বিপ্লবী ননীবালা দেবী।

১৫) "আজকের সমাজ ও সেদিনকার সমাজ, আজকের মেয়ে ও সেদিনকার মেয়ের মধ্যে আছে বিরাট সাগরের ব্যবধান।" -লেখিকার এই মতামতটি আলোচনা করো।

 উত্তর: লেখিকা কমলা দাশগুপ্ত স্বাধীনতা সংগ্রামী ননীবালা দেবীর কথা বলতে গিয়েই মন্তব্যটি করেছেন। গ্রেফতার হওয়া বিপ্লবীর স্ত্রী সেজে, তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্সি জেলে দেখা করে, লুকোনো 'মসার' পিস্তলের খবর নিয়ে এসেছিলেন তিনি। সে যুগের পরিপ্রেক্ষিতে একজন বাঙালি বিধবার পক্ষে ন কাজটা ছিল খুবই কঠিন। পরবর্তীকালে ননীবালা দেবী দেশকে ভালোবেসে এরকম কাজ আরও করেছেন। বর্তমান সমাজে সকলে যখন নিজের উন্নতির কথাই ভেবে চলেছে, তখন ননীবালা দেবীর মতো মানুষের দেশের প্রতি আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ও বিরল।

১৬) "এই মহীয়সী ছিলেন সেই পরিপতিসম্ভবা মেঘ।" -কার সম্পর্কে কেন এ কথা বলা হয়েছে? তাঁর নিজের জীবনের পরিণতি কী হয়েছিল? 

উত্তর: বিপ্লবী ননীবালা দেবী সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে। ননীবালা দেবী নিজের জীবন বিপন্ন করে বিপ্লবীদের আশ্রয় দিয়েছেন। বাঙালি বিধবা হয়েও ছদ্মবেশ নিয়ে জেল থেকে সংগ্রহ করে এনেছেন লুকিয়ে রাখা পিস্তলের গুপ্ত খবর সংগ্রহ করে এনেছেন। নিজে পালিয়ে বেড়িয়েছেন, গ্রেফতারও হয়েছেন। আবার বন্দি অবস্থায় অপমানের জবাব দিতে পুলিশকর্তাকে চড়ও মেরেছেন। এই সাহসিকতা ও দেশাত্মবোধ পরবর্তীকালে আরও বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল বলেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।

দু-বছর বন্দিজীবন কাটিয়ে মুক্তি পেলেও ননীবালা দেবীর শেষ জীবন ছিল দুঃখের। জেল থেকে বাইরে এসে পুলিশের ভয়ে কারুর কাছে তিনি আশ্রয় পাননি। আধঘুপচি ঘরে শূন্য সম্বল নিয়ে, আত্মীয়স্বজনের অনাদর, লাঞ্ছনা আর দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন কাটিয়েছিলেন তিনি।

১৭) বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের 'মসার) (পিস্তল)-এর খোঁজ নেওয়ার জন্য ননীবালা দেবী কী কৌশল অবলম্বন করেছিলেন?

উত্তর: বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের 'মসার' (পিস্তল)-এর খোঁজ নেওয়ার জন্য বিধবা ননীবালা দেবী রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে তাঁর ইন্টারভিউ নিয়ে পিস্তলের গুপ্ত খবর জেনে এসেছিলেন।

১৮) "এঁদের সকলেরই মাথায় অনেক হাজার টাকার চুলিয়া ছিল।”- 'হুলিয়া' শব্দটির অর্থ কী? এঁরা কারা? এঁদের আশ্রয়দাত্রী কে ছিলেন? হুলিয়া থাকার জন্য এঁরা কীভাবে চলাফেরা করতেন?

উত্তর: 'হুলিয়া' শব্দটির অর্থ হল পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করার জন্য তার চেহারার বর্ণনা-সহ বিজ্ঞাপন।

 এঁরা হলেন পলাতক বিপ্লবী নেতা যাদুগোপাল মুখার্জি, অমর চ্যাটার্জি, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চ্যাটার্জি, নলিনীকান্ত কর, বিনয়ভূষণ দত্ত ও বিজয় চক্রবর্তী।

এঁদের আশ্রয়দাত্রী ছিলেন ননীবালা দেবী। সম্পর্কে ইনি ছিলেন বিপ্লবী অমরেন্দ্র চ্যাটার্জির পিসি।

চুলিয়া থাকার জন্য এঁরা ছিলেন নিশাচর। শুধুমাত্র রাতের বেলা সুবিধামতো বেরিয়ে পড়তেন। দিনের বেলা দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরেই জ/ কাটাতেন। নিষ্ঠুর শিকারির মতন পুলিশ তাঁদের ধরতে এলেই তাঁরা নিমেষে অদৃশ্য হয়ে যেতেন। তাঁদের নামে চুলিয়া ছিল বলেই কোনো একটি নির্দিষ্ট আস্তানায় বেশিদিন তাঁরা থাকতেন না। তাই কখনও তাঁরা আশ্রয় নিতেন ও রিষড়ায়, আবার কও-বা চন্দননগরে।

১৯)"ননীবালা দেবী পলাতক হলেন"ননীবালা দেবী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন কেন? তিনি পালিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন? সেখানে তিনি কোন্ অসুখে আক্রান্ত হন? 

 উত্তর: চন্দননগরের বিভিন্ন বাড়িতে যখন ইংরেজের পুলিশ আচমকা তল্লাশি শুরু করল, তখন ননীবালা দেবী চন্দননগরে লুকিয়ে থাকাটা আর নিরাপদ

বলে মনে করলেন না। তাই তিনি চন্দননগর থেকে পালিয়ে যেতে একরকম বাধ্য হয়েছিলেন।

তিনি পেশোয়ারে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

সেখানে তিনি কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

২০)"ননীবালা দেবী সবই অস্বীকার করতেন"ননীবালা দেবী কোন কথা অস্বীকার করতেন? তার ফলশ্রুতিই বা কী হত?

উত্তর: পলাতক ননীবালা দেবীকে পেশোয়ার থেকে গ্রেফতার করে কাশীতে আনার পর সেখানে তাঁকে জেরা করতেন কাশীর ডেপুটি পুলিশ- সুপারিন্টেন্ডেন্ট জিতেন ব্যানার্জি। জেরার মুখে ননীবালা দেবী অনেক হাজার টাকার জুলিয়া জারি হওয়া পলাতক বিপ্লবী নেতাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতেই অস্বীকার করতেন। বলতেন, তাঁদের কাউকেই চেনেন না; কিছুই জানেন না।

 ননীবালা দেবীর অস্বীকারের ফলশ্রুতিস্বরূপ তাঁকে (ননীবালা দেবীকে) মাটির নীচে অবস্থিত আলো-বাতাসহীন অন্ধকার পানিশমেন্ট সেলে তিনদিন প্রায় আধঘণ্টা সময় ধরে তালাবন্ধ করে আটকে রাখা হত। কবরের মতো সেই 'পানিশমেন্ট সেল'-এ আধঘণ্টা পর দেখা যেত, তাঁর অর্ধমৃত অবস্থা,তবুও পুলিশ তাঁর মুখ থেকে কোনো স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারেনি।

২১) কাশীর জেলের 'পানিশমেন্ট সেল'-টির অবস্থা কেমন ছিল? সেখানে ননীবালা দেবীর ওপর কী ধরনের অত্যাচার করা হত?

উত্তর: কাশীর জেলের 'পানিশমেন্ট সেল'-টি মাটির তলায় অবস্থিত ছিল। সেখানে একটিমাত্র দরজা ছিল। কিন্তু আলো-বাতাস প্রবেশ করার জন্য আর কোনো দরজা বা জানালা ছিল না। ফলে, জায়গাটি ছিল একেবারে কবরের মতো।

ননীবালা দেবীর মুখ থেকে হুলিয়া জারি হওয়া বিপ্লবীদের সম্পর্কে তথ্য বার করার জন্য তিনদিন প্রায় আধঘণ্টা সময় ধরে তাঁকে ওই আলো- বাতাসহীন অন্ধকার সেলে তালাবন্ধ করে আটকে রাখা হত। তৃতীয় দিনে তাঁকে ওই সেলে আধঘণ্টারও বেশি সময়, প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিল। ননীবালা দেবীর স্নায়ুর শক্তিকে চূর্ণ করে দেওয়ার এটাই ছিল চূড়ান্ত প্রচেষ্টা। সেদিন তালা খুলে দেখা গেল ননীবালা দেবী অজ্ঞান অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন।

২২) "ননীবালা দেবী তখুনি দরখাস্ত লিখে দিলেন।" -ননাবাল। কাকে দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন? দরখাস্তের বিষয়বস্তু কী ছিল? শেষপর্যন্ত ভালে সেই দরখাস্তের কী পরিণতি হয়েছিল? 

উত্তর: ননীবালা দেবী কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলের আই বি পুলিশের স্পেশাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট গোল্ডি সাহেবের উদ্দেশে দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন।  

দরখাস্তের বিষয়বস্তু হিসেবে ননীবালা দেবী লিখেছিলেন, তিনি (ননীবালা দেবী) বাগবাজারে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের স্ত্রী সারদামণি দেবীর কাছে থাকতে বিশেষ ইচ্ছুক। একমাত্র তা হলেই তিনি তাঁর অনশন তুলে নেবেন।

শেষপর্যন্ত ননীবালা দেবী লিখিত ওই দরখাস্তের আবেদন মঞ্জুর হয়নি। গোল্ডি সাহেব সেই দরখাস্তটি নিয়ে ছিঁড়ে, দলা পাকিয়ে সেটিকে ছেঁড়া কাগজের টুকরিতে ফেলে দিয়েছিলেন।

২৩) "এবার আমায় দলে নিয়ে নাও"। -কে, কাকে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন? তিনি কেন, কোন্ দলে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন?

 উত্তর: পরাধীন ভারতবর্ষের মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী দুকড়িবালা দেবী তাঁর বোনপো নিবারণ ঘটকের কাছে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

 দুকড়িবালা দেবীর বাড়ি ছিল তাঁর বোনপো তথা বিপ্লবী নিবারণ ঘটক ও তাঁর বিপ্লবী বন্ধুদের আড্ডার জায়গা। নিবারণবাবু প্রায়ই সেই বাড়িতে বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসতেন এবং স্বদেশি বা বেআইনি বই পড়তেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে মেলামেশার ফলে দুকড়িবালা দেবী ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজেকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং বিপ্লবীদের দলে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

২৪) পুলিশ কোন্ অভিযোগে দুকড়িবালা দেবীকে গ্রেফতার করে? বিচারে তাঁর কী শাস্তি হয়?

উত্তর: দুকড়িবালা দেবী বোনপো নিবারণ ঘটকের দেওয়া চুরি করা সাতটা 'মসার' পিস্তল তাঁর নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। বেআইনি অস্ত্র লুকিয়ে রাখার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।

বিচারে দুকড়িবালা দেবীর দু-বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়।

২৫) পুলিশ কোন্ অভিযোগে দুকড়িবালা দেবীকে গ্রেফতার করেছিলেন? বিচারে তাঁর কী শাস্তি হয়? উত্তর: বোনপো বিপ্লবী নিবারণ ঘটকের চুরি করে আনা সাতটা মসার পিস্তল লুকিয়ে রাখার অভিযোগে পুলিশ দুকরিবালা দেবীকে গ্রেফতার করে। 

বিচারে দুকরিবালা দেবীর দু-বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা হয়।

২৬) দুকড়িবালা দেবীর স্বামীর নাম কী ছিল?

উত্তর: দুকড়িবালা দেবীর স্বামীর নাম ছিল ফণীভূষণ চক্রবর্তী। 

২৭) দুকড়িবালা দেবী কোথাকার মানুষ ছিলেন?

উত্তর: দুকড়িবালা দেবী ছিলেন বীরভূম জেলার নলহাটি থানার ঝাউপাড়া গ্রামের মানুষ।

২৮) কার কাছ থেকে দুকড়িবালা দেবী বিপ্লবের অনুপ্রেরণা পান?

উত্তর: মাইনিং ক্লাসের ছাত্র বোনপো নিবারণ ঘটকের কাছ থেকে দুকড়িবালা দেবী বিপ্লবের অনুপ্রেরণা লাভ করেন।

২৯) নিবারণ দুকড়িবালা দেবীকে কী লুকিয়ে রাখতে দিয়েছিলেন? 

উত্তর: নিবারণ দুকড়িবালা দেবীকে সাতটা মসার পিস্তল লুকিয়ে রাখতে দিয়েছিলেন।

৩০) দুকড়িবালা দেবীর বোনপোর নাম কী? 

 উত্তর: দুকড়িবালা দেবীর বোনপোর নাম ছিল নিবারণ ঘটক।

৩১) জাহাজ থেকে রডা কোম্পানির মালপত্র কে নিয়ে আসছিলেন? 

উত্তর: জাহাজ থেকে রডা কোম্পানির মালপত্র নিয়ে আসছিলেন জেটি সরকার শ্রীশ মিত্র।

৩২) দুকড়িবালা দেবী কবে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন?

উত্তর: দুকড়িবালা দেবী ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন।

৩৩) "এই চুরির কাহিনি অভিনব"-অভিনব কাহিনিটি উল্লেখ করো।

উত্তর: ১৯১৪ সালের ২৬ আগস্ট রডা কোম্পানির জেটি সরকার শ্রীশ মিত্র বড়োসাহেবের হুকুমমতো মালপত্র খালাস করতে জাহাজঘাটে যান। তিনি অস্ত্রপূর্ণ ২০২টি বাক্স সাতটি গোরুর গাড়িতে বোঝাই করে যেতে থাকেন। ছ- টি গাড়ি ঠিকঠাক পৌঁছে গেলেও একটি গাড়ির গাড়োয়ান অর্থাৎ ছদ্মবেশী বিপ্লবী হরিদাস দত্ত গাড়িটিকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। গাড়িটিতে নয়টি বাক্স ভরতি কার্তুজ ছিল, আর একটি বাক্সে ছিল পঞ্চাশটি মসার পিস্তল।

৩৪) “এগুলি ছিল রডা কোম্পানি থেকে চুরি করে আনা জিনিস।" - কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তা চুরি হয়েছিল?

উত্তর: উল্লিখিত অংশে সাতটি মসার পিস্তলের কথা বলা হয়েছে।

 চুরির ঘটনাটি ছিল অভিনব। ১৯১৪ সালে ২৬ আগস্ট রডা কোম্পানির জেটি সরকার শ্রীশ মিত্র বড়োসাহেবের হুকুমমতো মালপত্র খালাস করতে জাহাজঘাটে যান। তিনি ২০২টি অস্ত্রপূর্ণ বাক্স সাতটি গোরুর গাড়িতে তোলেন। ছটা গাড়ি ঠিকঠাক গুদামে পৌঁছোলেও একটি গাড়ির গাড়োয়ান ছদ্মবেশী বিপ্লবী হরিদাস দত্ত গাড়িটিকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। সেই গাড়ির নয়টি বাক্সে ছিল কার্তুজ, আর একটিতে ছিল পঞ্চাশটি মসার পিস্তল। এগুলি পরে বিপ্লবীদের বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

৩৫) "অসহ্য পরিবেশের মধ্যে থেকেও, প্রতিদিন আধমণ ডাল ভাঙতে থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর বাবাকে চিঠি লিখলেন 'তিনি ভালোই আছেন'...।" এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দুকড়িবালা দেবীর চরিত্রের কোন্ বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে?

উত্তর: দুকড়িবালা দেবী ছিলেন অদম্য সাহসী। তাই কোলের সন্তানকে ফেলে রেখে অবলীলায় দু-বছরের জন্য সশ্রম কারাদন্ড বরণ করে নিতে পেরেছিলেন। প্রতিদিন জেলের ভিতর আধমন ডাল ভাঙা ছিল যথেষ্ট কষ্টকর কাজ। অনেক অত্যাচার ও কষ্ট সহ্য করেও তিনি বিপ্লবীদের কথা গোপন রেখেছিলেন। সন্তানস্নেহে পাগল হওয়া সত্ত্বেও এবং অন্ধ কারাগারের অশেষ দুঃখকষ্ট সহ্য করেও বাবাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে তিনি 'ভালোই আছেন'-একথা বলা কোনো সাধারণ মানের মানুষের কাজ নয়। দৃঢ় দেশপ্রেমই তাঁকে একথা বলতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।

আরও পড়ো- 

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area