Ads Area


দশম শ্রেণীর বাংলা (সহায়ক পাঠ) || কোনি (মতি নন্দী) প্রশ্ন ও উত্তর || Koni Questions Answers Class-10

কোনি
 (মতি নন্দী)

প্রিয় মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর,

জীবিকা দিশারি ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা বইয়ে সহায়ক পাঠ কোনি গল্পটি প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। এই গল্পটি প্রশ্ন ও উত্তর সমাধানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্য কোনি গল্পের সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে। 


দশম শ্রেণীর বাংলা (সহায়ক পাঠ) || কোনি (মতি নন্দী) প্রশ্ন ও উত্তর || Koni Questions Answers Class-10


দশম শ্রেণীর বাংলা (সহায়ক পাঠ) || কোনি (মতি নন্দী) প্রশ্ন ও উত্তর || Koni Questions Answers Class-10


অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি

১) 'আজ বাবুণী'। - বারুণী কী?

উত্তর: হিন্দুধর্মমতে শতভিযানক্ষত্রযুক্ত চৈত্রমাসের কৃষ্ণ প্রয়োদশীতে গঙ্গাপুজা ও গঙ্গাস্নানে পুণ্যলাভ হয়। এদিন গঙ্গায়। কাঁচা আম বিসর্জন দেওয়া হয়। একেই বারুণী বলে।

২) বাবুণীর দিন ছেলেরা জল থেকে কাঁচা আম স্কুলে নিয়ে কী করে?

উত্তর: বাবুণীর দিন ছেলেরা জল তোলপাড় করে কাঁচা আম তুলে নিয়ে গিয়ে পথের ধারের বাজারে অনেক কম দামে। বিক্রি করে।

৩) বারুণীর দিন বামুনেরা কী কী করে?

উত্তর: বাবুণীর দিন বামুনেরা ঘাটের মাথায় ট্রেন লাইনের দিকে। মুখ করে বসে পয়সা নিয়ে জামাকাপড় জমা রাখে, গায়ে মাখার। সরষে বা নারকেল তেল দেয় এবং কপালে চন্দনের ছাপ আঁকে।

৪) লোকে পথের বাজার থেকে কী কী কেনে?

উত্তর: লোকে পথের বাজার থেকে ওল বা থোড় বা কলম্বা লেবু কেনে।

৫) বিন্টু ধরের পরিচয় দাও।

উত্তর: বিচরণ ধর আই. এ. পাস, অত্যন্ত বনেদি বংশের লোক। প্রায় সাতটা বাড়ির মালিক। বড়োবাজারে তাঁর ৪ ঝাড়নমশলার কারবার। তাঁর দেহের ওজন সাড়ে তিন মণ।

৬) ক্ষিতীশের চেহারা কেমন ছিল?

উত্তর: ক্ষিতীশ সিংহের চোখে পুরু লেন্সের চশমা, মাথায় কাঁচাপাকা কদমছাঁট চুল, বয়স পঞ্চাশের আশেপাশে, গায়ের রং ধুলোমাখা পোড়ামাটির মতো আর চোখের মণি ধূসর।

৭) বিন্টু গম্ভীর স্বরে নির্দেশ দিল, 'তানপুরো ছাড়'-এরপর কী ঘটেছিল?

উত্তর: বিন্টুর নির্দেশে মালিশওয়ালা দশ আঙুল দিয়ে তার সারা শরীরের চর্বিগুলো খামচে টেনে টেনে ধরে ছেড়ে দিতে লাগল। একেই তানপুরো ছাড় বলা হয়েছে।

৮) 'তবলা বাজা'-মালিশওয়ালা কীভাবে তবলা বাজিয়েছিল?

উত্তর: মালিশওয়ালা দশ আঙুল দিয়ে বিন্টু ধরের গলা থেকে কোমর অবধি ধপাধপ চাঁটি মারতে শুরু করেছিল। তবলা বাজানো বলতে এ কথাই বোঝানো হয়েছিল।

৯) 'সারেগামা কর।-মালিশওয়ালার সারেগামা করার বর্ণনা দাও।

 উত্তর: মালিশওয়ালা বিষ্ণু ধরের সারা আঙুলগুলো দিয়ে হারমোনিয়াম বাজাতে শুরু করেছিল। এর ফলে বিন্টুর সুড়সুড়ি লাগছিল।

১০) 'এই সুখ আপনার আছে?'-কোন্ সুখের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ক্ষিতীশ সিংহ নিজের শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ব্যায়াম করেন। সেইজন্য তাঁর এত খিদে হয় যে তখন সব কিছুই অমৃত মনে হয়। এই সুখ বিষ্ণু ধরের নেই।

১১) 'আপনার ওজনটা খুব বিপজ্জনক হার্টের পক্ষে'।-এ কথা বলার কারণ কী? 

উত্তর: বিন্টু ধরের সাড়ে তিন মণী দেহ দেখে ক্ষিতীশ এ কথা বলেছিলেন। কারণ এত ওজন হলে মানুষের ব্লাড সুগার, ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। সে মারাও যেতে পারে। 

১২) 'হয় আম দিবি নয় চোখ নোব'-কে, কার প্রতি এই উক্তি করেছিল?

উত্তর: কোনি ভাদুকে এই কথা বলেছিল। বাবুণীতে গঙ্গা থেকে আম নেওয়ার প্রতিযোগিতায় একটি আমের অধিকার রক্ষা করতে কোনি এই কথা বলেছিল।

১৩) 'আমাকে রাগালে কি হয়, এবার বুঝলি তো।' -কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: বাবুণীর দিন গঙ্গা থেকে আম সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতায় কোনির সঙ্গে ভাদুর বিরোধ বাধে। কোনি আত্মরক্ষা করতে গিয়ে ভাদুর আঙুলে কামড়ে গর্ত করে দেয়। এখানে সেই ঘটনার কথা বলা হয়েছে।

১৪) শরীরটাকে চাকর বানানো বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: শরীরটাকে চাকর বানানোর অর্থ হল, যে-কোনো খাবার খেয়ে হজম করা, পাঁচ মাইল হেঁটে যাওয়া, গাছের ডাল ধরে ঝুলে থাকা-অর্থাৎ নিজের ইচ্ছায় সব ধরনের কাজ করার মতো স্বাস্থ্য অর্জন করা।

১৫) 'ঘাটে থই থই ভিড়'-ভিড়ের কারণ কী?

উত্তর: বাবুণী উৎসবের দিন মানুষ পুণ্য অর্জনের জন্য গঙ্গায় গিয়ে পুজো করে ও কাঁচা আম বিসর্জন দেয়। এই উপলক্ষে কেউ পুণ্য অর্জন করতে, কেউ অর্থ উপার্জন করতে, কেউ বা আম কুড়োতে ঘাটে আসে। তাই এই ভিড়।

১৬) সেই আমে হাত দেয়ার সাধ্য কারুর নেই'কোন্ আমের কথা বলা হয়েছে? 

উত্তর: বারুণী উৎসবের দিন মানুষ গঙ্গায় আম বিসর্জন

দেয়। কমবয়সি ছেলেরা গঙ্গায় সাঁতার দিয়ে সেই আম সংগ্রহ করে প্যান্টের পকেটে রেখে দেয়। পরে তা কম দামে বিক্রি করে। সেই আমে হাত দেওয়ার সাধ্য কারুর নেই। 

১৭) 'চাহনিটা এমন...'- চাহনির কোন্ বিশেষত্বের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ক্ষিতীশের প্রথম দর্শনে লেখক তার চোখের চাহনিকে এইভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তার ধূসর মণিটা দেখলে মনে হয় সূর্যের দিকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে তাকিয়ে থেকেই মণির রং ফিকে হয়ে গেছে। চাহনি দেখলে মনে হয় তার মতে না মিললে সেগুলিকে ব্লোটর্চের মতো পুড়িয়ে দেবে।

১৮) মালিশওয়ালা বিষ্ণু ধরকে কী কী ভাবে মালিশ করেছিল?

উত্তর: মালিশওয়ালা তার ডান হাঁটু বিন্টুর কোমরে চেপে মেরুদণ্ড বরাবর ঘাড় পর্যন্ত ওঠানামা করাতে লাগল। এরপর হাতের তালু জোড়া করে বিষ্ণুর পিঠে কোদালের মতো চালাতে লাগল। তারপর তানপুরা, তবলা ও সারেগামা বাজানোর ঢঙে মালিশ করেছিল।

১৯) 'দৃশ্যটা অনেককে আকৃষ্ট করল'-কোন্ দৃশ্য?

উত্তর: ক্ষিতীশ জগিং করতে করতে বিষ্ণু ধরের দিকে এগিয়ে আসছিল। তাই দেখে বিষ্ণু বুনো মোষের মতো তেড়েফুঁড়ে উঠে দাঁড়ালে সে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। তারপর নাচের ভঙ্গিতে শরীরটাকে পেন্ডুলামের মতো ডানে-বাঁয়ে দুলিয়ে লাফাতে লাগল। বিষ্ণু এইসময় থাবার মতো হাত তুলে অপেক্ষা করছিল। এই দৃশ্যের কথা বলা হয়েছে।

২০) 'আমি রোজ এক্সারসাইজ করি'-কী ধরনের এক্সারসাইজের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ক্ষিতীশ শরীরকে সুস্থ সবল রাখার জন্য রোজ এক্সারসাইজ করত। সে যেসব এক্সারসাইজ করত, তার মধ্যে ছিল আইসোমেট্রিক অর্থাৎ সম পরিমাপবিশিষ্ট ওজনের ব্যায়াম, ক্যালিসথেনিক অর্থাৎ শক্তি ও সৌন্দর্যবৃদ্ধিকর ব্যায়াম ও বারবেল অর্থাৎ উভয়পাশে ওজন বিশিষ্ট দণ্ড নিয়ে ব্যায়াম।

২১) 'মনের জোরেই সব হয়'-মনের জোরে কী কী হয় বলে ক্ষিতীশ মনে করে?

উত্তর: ক্ষিতীশ মনে করে যে, ইচ্ছাশক্তি দিয়ে শরীরের দুর্বলতা ঢাকা দেওয়া যায়। শরীর যতটা করতে পারে ভাবে, তার থেকেও শরীরকে দিয়ে বেশি করাতে পারে ইচ্ছাশক্তি। তাই শরীরের সঙ্গে মনকেও গড়তে হয়। মন হুকুম করবে, শরীর কাজ করবে।

২২) ইচ্ছে করে, খুব রোগা হয়ে যাই'-কে কেন এ কথা বলেছে?

উত্তর: ক্ষিতীশ বিষ্ণুচরণ ধরের চেয়ে বয়সে বড়ো হওয়া এর সত্ত্বেও শারীরিক দিক থেকে অনেক সক্ষম ও সুস্থ। কিন্তু বিষ্ণু এসে ধর তার তিন মণী চেহারা নিয়ে নড়াচড়াও করতে পারে না। তাই ক্ষিতীশের সক্ষমতা তার মধ্যে এই অনুশোচনার জন্ম দেয়।

২৩) শুধু চোখ দিয়ে কামান দাগতে লাগল- চোখ দিয়ে কামান দাগা বলতে কী বোঝো?

উত্তর চোখ দিয়ে কামান দাগার অর্থ হল, চোখের দৃষ্টির  মাধ্যমে প্রচন্ড রাগের বহিঃপ্রকাশ। কথায় বলে, চোখ মনের আয়না। তাই মানুষের মনোজগতে যে সমস্ত ভাব আলোড়ন - তোলে তা চোখের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এখানে বিষ্ণুচরণ চোখ দিয়ে ক্ষিতীশের উপর তার রাগ প্রকাশ করেছে।

 ২৪) জোর বলতে শুধু গায়ের জোরই বোঝায় না'-জোর বলতে কোন্ কোন্ জোর বোঝায়?

উত্তর: গায়ের জোর ছাড়াও মানুষ আর যে যে ভাবে নিজের জোর বাড়াতে পারে, সেগুলি হল ইচ্ছাশক্তির জোর, বৃদ্ধিবৃত্তির জোর। ইচ্ছাশক্তি বা মনের জোর শুধু মানুষেরই একচেটিয়া। অন্য প্রাণীদের সেই ক্ষমতা নেই।

২৫) 'ওরা ঠিক করেছে তোমাকে অপমান করবে'-কাদের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: এখানে 'ওরা' বলতে জুপিটার সুইমিং ক্লাবের সদস্য প্রেসিডেন্ট বিনোদ ভড়, সম্পাদক ধীরেন ঘোষ, যজ্ঞেশ্বর ভট্টাচার্য, চিফ ট্রেনার হতে ইচ্ছুক হরিচরণ মিত্র, বদু চাটুজ্জে প্রমুখের কথা বলা হয়েছে।

২৬) 'প্রজাপতি'র পরিচয় দাও।

উত্তর: ক্ষিতীশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতী পরিচালিত মহিলা ও শিশুদের পোশাক তৈরির দোকান হল 'প্রজাপতি'। দোকানে কোনো পুরুষ কর্মচারী নেই। লীলাবতী দুজন মহিলা কর্মচারীকে নিয়ে চার বছরের মধ্যে প্রজাপতিকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।

২৭) 'ক্ষিতীশ তর্ক শুরু করেছিল'-কোন্ বিষয়ে ক্ষিতীশ তর্ক শুরু করেছিল?

উত্তর: হিন্দুধর্মের গৃহবধূদের প্রচলিত সংস্কার অনুযায়ী লীলাবতী ক্ষিতীশের এঁটো থালায় ভাত খেত। স্বাস্থ্যসচেতন ক্ষিতীশ এই বিষয়টিকে 'অস্বাস্থ্যকর' বলে তর্ক শুরু করেছিলেন। 

২৮) ক্ষিতীশের আবছায়া চেতনায় ফুটে উঠল কী ফুটে উঠল?

উত্তর: বাবুণীর দিন ক্ষিতীশ কোনিকে গঙ্গায় সাঁতার কাটতে দেখেছিলেন। সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশের জহুরিচোখ কোনির যাই গতিভাকে চিনে নিয়েছিল। তাই তার ঘুমের মধ্যেও কোনির প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠেছিল।

২৯) 'কোনি পা ছুঁড়ল'-কোন সময়ের কথা কছু বলা হয়েছে?

 উত্তর: গঙ্গার ঘাটে আম নিয়ে কোনি ও ভাদুর মধ্যে যখন চপুর লড়াই বেধেছিল, তখন ভাদু কোনির পিঠের ওপর বসে তার বাগলা, মাথা ধরে, কাদায় মুখটা ঘষে দেবার চেষ্টা করতে থাকে। তখনই কোনি পা ছুঁড়েছিল।  ৩০) 'জুটেছে আবার এক মেয়েমদ্দানি'- কাকে কেন মেয়েমদ্দানি বলা হয়েছে?

 উত্তর: এখানে কোনির কথা বলা হয়েছে। 'মরদ' বা 'মর্দ' শব্দের অর্থ হল পুরুষ, যার স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ হিসেবে 'মদ্দানি' বা 'মর্দানি' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। কোনি ছেলেদের সঙ্গে ছেলেদের কমতোই সাঁতার, মারামারি ইত্যাদি করে বেড়াত বলে গঙ্গাঘাটের এক বৃদ্ধ এই মন্তব্য করেছে।

৩১) ক্ষিতীশের বাড়িটি কেমন ছিল?

 উত্তর: সরু গলির মধ্যে ক্ষিতীশের একতলা টালির চালের কাবাড়ি। সদর দরজার পর মাটির উঠোন; উঠোনে নানারকমের গাছ। একদিকে টিনের চালের রান্নাঘর ও কলঘর আর একদিকে দালান ও তার পিছনে দুটি ঘর।

৩২) 'তাই বহুকাল পর সে গঙ্গাস্নানে গিয়েছিল' -কেন সে বহুকাল পর গঙ্গাস্নানে গিয়েছিল?

উত্তর: ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতী প্রচুর জল খরচ করে, অথচ বাড়ির কলে জল আসে সামান্য। তাই ক্ষিতীশকে রাস্তার টিউবওয়েলে স্নান করতে হয়। কিন্তু সেদিন সকাল থেকেই টিউবওয়েল থেকে জল পড়ছিল না। তাই তাকে বহুকাল পর গঙ্গাস্নানে যেতে হয়েছিল।

৩৩) চোখ বুজে বিশু ঘর ঘরর্ শুরু করল' -বিশু কে? সে কেন ঘর্ ঘর্ করছিল?

উত্তর: বিশু হল ক্ষিতীশের পোষা বিড়াল। ক্ষিতীশ বিশুকে কোলে নিয়ে তার গলা চুলকে দিচ্ছিল। বিড়ালদের স্বাভাবিক ধর্মই হল তারা আদর পেলেই গলা থেকে ঘর্ শব্দ বের করে। ভালোবাসার ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে বিশুও এমন করছিল।

৩৪) খাদ্য সম্পর্কে ক্ষিতীশের কী মত ছিল?

উত্তর: ক্ষিতীশের বাড়িতে কুকারে প্রায় সবই সিদ্ধ রান্না হত। কারণ ক্ষিতীশ মনে করত যে, বাঙালি রান্নায় স্বাস্থ্য থাকে না। এতে পেট খারাপ হয়ে যায়। তাই বাঙালিরা শরীরে জোর পায়ি না। সিদ্ধ খেলে খাদ্যপ্রাণ অটুট থাকে এবং সর্বাধিক প্রোটিন ও ভিটামিন থাকে।

৩৫) 'বড় খাঁটি কথা বলে গেছেন'-কোন্ কথা?

উত্তর: ক্ষিতীশ কখনও নিমন্ত্রণ বাড়ি খায় না। তার ক্লাবের ছেলেমেয়েদের সে বলত যে, 'ডাক্তার রায়' অর্থাৎ ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় বলতেন, এক একটা বিয়েবাড়িতে নিমন্ত্রণ খেলে এখন এক এক বছরের আয়ু কমে যায়। এই কথাটিকেই সে খাঁটি ভার কথা মনে করত।

৩৬) 'সিনহা টেলারিং' কী?

 উত্তর: ক্ষিতীশ যখন দোকান চালাত, তার নাম ছিল 'সিনহা টেলারিং'। তখন দুজন দর্জি জামা প্যান্ট তৈরি করত আর দেয়াল আলমারিতে ছিল কিছু সিন্থেটিক কাপড়। যদিও সাঁতার-প্রাণ দ' ক্ষিতীশের ব্যাবসায় মন না থাকায় দোকানটি বেশিদিন চলেনি। 

৩৭) লীলাবতী দোকানের দায়িত্ব নেওয়ার পর কী পরিবর্তন ঘটল?

উত্তর: লীলাবতী টেলারিং ডিপ্লোমা পাওয়া দুজন মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে নিজের গয়না বন্ধক দিয়ে দোকানটি ঢেলে সাজায়। নাম দেয় 'প্রজাপতি'। তারা শুধু মহিলা ও বাচ্চাদের পোশাক তৈরি করে। দোকানে কোনো পুরুষ কর্মচারী নেই। লোকসানে ব চলতে থাকা দোকানটি কয়েক বছরেই রমরম করে চলতে থাকে।  

৩৮) 'লীলাবতীর খাওয়ার সময় তাই কখনোই সে সামনে থাকে না'-লীলাবতীর খাওয়ার সময় সে সামনে না থাকার কারণ কী?

উত্তর: হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার অনুযায়ী লীলাবতী তার স্বামীর এঁটো থালায় ভাত খেত। কিন্তু ক্ষিতীশের এতে আপত্তি ছিল। কারণ, বিষয়টি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু এই ব্যাপারে ক্ষিতীশের কোনো আপত্তি লীলাবতী শুনত না। তাই প্রতিবাদ হিসেবে সে লীলাবতীর খাওয়ার সময় সামনে থাকত না।

৩৯) 'এই ঘরে ক্ষিতীশ দুপুরে এক ঘণ্টা ঘুমোয়' ঘরটি কিরূপ?

উত্তর: ক্ষিতীশ যে ঘরে দুপুরে এক ঘণ্টা ঘুমোয়, সেই ঘরে বই, ম্যাগাজিন, তক্তপোশ এবং তার নীচে ট্রেনিংয়ের জন্য রবারের দড়ি, স্প্রিং ও লোহা ছাড়া আর কিছু নেই। কোনো বিছানা নেই, পাখা নেই। কারণ সে মনে করে, চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে গুরু ও শিষ্য দুজনকেই কঠোর জীবনযাপন করতে হয়। 

৪০) 'তক্তপোশে শুয়ে চোখ বুজে ক্ষিতীশ দীর্ঘশ্বাস ফেলল'-কেন ক্ষিতীশ দীর্ঘশ্বাস ফেলল?

উত্তর: প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশ ছিল অত্যন্ত উচ্চমানের। শিষ্যের সাফল্যের জন্য শিষ্যকে সে যতটা পরিশ্রম করায়, সে নিজেও ততটাই কঠিন জীবনযাপন করে। স্বাস্থ্য ও সক্ষমতা সম্বন্ধে তার ধারণা ছিল অতি স্বচ্ছ। তা সত্ত্বেও তার মনোমতো কোনো শিষ্য ছিল না বলে সে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিল।

৪১) তাকে মোটিভেট করতে হবে'-মোটিভেট করার তাৎপর্য কী?

উত্তর: 'মোটিভেট' শব্দটির বাংলা অর্থ হল-অনুপ্রাণিত করা। গুরু শিষ্যকে কেবল শিক্ষাই দেন না, তার অনুপ্রেরণা জোগানোর দায়িত্বও গুরুর। কথা, কাজ ও উদাহরণের মাধ্যমে শিষ্যের মধ্যে জয়ের খিদে তৈরি করাই হল মোটিভেশনের প্রথম ধাপ।

৪২) অমিয়া আর বেলা জুপিটার ছেড়ে অ্যাপোলোয় গিয়েছিল কেন?

উত্তর: ক্ষিতীশ সিংহ অমিয়া ও বেলার চুল কাটতে চেয়েছিলেন। তাদের পুরুষদের মতো বারবেল নিয়ে এক্সারসাইজ করতে বলেছিলেন। তাদের সাজ-পোশাক নিয়েও তিনি বিরক্ত ছিলেন। নিয়মানুবর্তিতায় বিশ্বাসী ক্ষিতীশের এই আচরণ মানতে না পেরে তারা অ্যাপোলোয় গিয়েছিল।

৪৩) 'হঠাৎ বিষম খেয়ে কাশতে শুরু করল ক্ষিতীশ'-ক্ষিতীশের কাশির কারণ কী?

উত্তর: জুপিটার ক্লাবের সভায় চিফ ট্রেনারের পদপ্রার্থী হরিচরণ মিত্র জানিয়েছিলেন যে, তিনি ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। এই নির্জলা মিথ্যে সহ্য করতে না পেরে ক্ষিতীশ বিষম খেয়ে কাশতে শুরু করেন।

৪৪) 'জেলাসিই হোক ফেলাসি-ই হোক...'জেলাসি ও ফেলাসি কথার অর্থ কী?

উত্তর: 'জেলাসি' অর্থাৎ ইংরেজি 'jealousy' শব্দের অর্থ হল হিংসা বা ঈর্ষা। অন্যদিকে ফেলাসি বা ইংরেজি 'fallacy' শব্দটি দর্শনশাস্ত্রের বিষয়, এর অর্থ ভ্রমাত্মক যুক্তি বা হেত্বাভাস। 

৪৫) চ্যাম্পিয়ন সুইমার তৈরি করার বিষয়ে ক্ষিতীশের মত কী ছিল?

উত্তর: ক্ষিতীশ জানিয়েছিলেন যে, চ্যাম্পিয়নদের তৈরি করা যায় না, তারা জন্মায়। তাদের খোঁজে থাকতে হয়, লক্ষণ মিলিয়ে চিনে নিতে হয়।

৪৬) 'তার কাছে এর থেকে সুবাস পৃথিবীতে নেই'-কোন্ সুবাসের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ক্ষিতীশ জুপিটার ক্লাবের চিফ ট্রেনারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে কমলদিঘির সামনে দাঁড়ালে জল থেকে শ্যাওলা ও ঝাঁঝির আঁশটে গন্ধ ভেসে আসছিল। পঁয়ত্রিশ বছরের চেনা এই গন্ধ সাঁতার-অন্ত প্রাণ ক্ষিতীশের সবচেয়ে প্রিয়।

৪৭) 'কিন্তু তা কি সে পারবে?'—কী পারার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: জুপিটার ক্লাবের স্বার্থপর সদস্যদের চক্রান্তে ক্ষিতীশ চিফ ট্রেনারের পদ হারান। ভেলো তাঁকে অ্যাপোলো ক্লাবে যোগ দিতে বলে। কিন্তু মনেপ্রাণে জুপিটারের হিতাকাঙ্ক্ষী ক্ষিতীশের মন এ কথা মানতে চায় না।

৪৮) 'সেটা ঘিরে সাতজন বসে'-এই সাতজনের নাম লেখো।

উত্তর: জুপিটার ক্লাবের সভায় উপস্থিত সাতজন হলেন- নতুন প্রেসিডেন্ট ও এম এল এ বিনোদ ভড়, সম্পাদক ধীরেন ঘোষ, যজ্ঞেশ্বর ভট্টাচার্য, চিফ ট্রেনার পদপ্রার্থী হরিচরণ মিত্র, প্রফুল্ল বসাক, বদু চাটুজ্জে এবং কার্তিক সাহা।

৪৯) হরিচরণ নিজের সম্পর্কে কী কী তথ্য দিয়েছিল?

উত্তর: হরিচরণ মিত্র জানিয়েছিল যে, সে নাকি ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিকে দেড় হাজার মিটারে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব। করেছিল। মাত্র পয়েন্ট ফাইভ সেকেন্ডের জন্য ব্রোঞ্জ পায়নি আর গোল্ড জয়ী আমেরিকান ম্যাকলেন নাকি তাকে বলেছিল, 'তুমি পাশে ছিলে তাই এত ভাল চার্জ পেয়েছি'।

৫০) 'নিশ্চয় আপনার কাশির অসুখ আছে' -কাকে কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: জুপিটার ক্লাবের সভায় হরিচরণ মিত্রের লন্ডন অলিম্পিকে যাওয়া ও একটুর জন্য ব্রোঞ্জ ফসকে যাওয়ার মিথ্যে --' গল্প শুনে ক্ষিতীশ হঠাৎই বিষম খায় ও কাশতে থাকে। বারবার কাশতে থাকায় প্রেসিডেন্ট বিনোদ ভড় বিরক্ত হয়ে ক্ষিতীশকে এ কথা বলে।

৫১) অভিযোগ এনেছে সুইমাররা'-সুইমাররা কী অভিযোগ এনেছিল?

 উত্তর: জুপিটার সুইমিং ক্লাবের সাঁতারুরা ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এনেছিল। ক্ষিতীশ তাদের অতিরিক্ত খাটায়, না খাটলে গালাগাল করে। শ্যামল, গোবিন্দ, সুহাস প্রমুখ দক্ষ কারো সাঁতাবুকে অযথা অপমান করে। মহিলা সাঁতারুদের পোশাক, সাজ লিয়ে ইত্যাদি নিয়ে খিটখিট করে।

৫২) 'এজন্য আমি কঠোর হয়েছি-কে, কী জন্য কঠোর হয়েছে?

উত্তর: ক্ষিতীশ এ কথা বলেছিল। সে জুপিটার ক্লাবের থকে। সদস্যদের অভিযোগের উত্তরে জানায় যে, সে পঁয়ত্রিশ বছর এই এই ক্লাবে আছে। তাই এই ক্লাবের গৌরব বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সে সাঁতার এই ওয়াটারপোলো প্লেয়ার ও ডাইভারদের দক্ষতা বাড়াতে চায়।

৫৩) 'কেন এই থমকে থাকা'-থমকে থাকা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: জপিটার ক্লাবের সভায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ক্ষিতীশ। উত্তরে ক্ষিতীশ জানায় যে, সাঁতারে সারা পৃথিবী অগ্রসর হয়েছে।

কিন্তু সেখানে ভারতবর্ষের এক একটা রেকর্ড দশ-পনেরো বছরের পুরোনো। শচীন নাগ রেকর্ড করেছিলেন পঁচিশ বছর আগে। একেই থমকে থাকা বলা হয়েছে।

৫৪) 'খাটবে যে খাদ্য কই'-এ কথার তাৎপর্য

বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: ক্ষিতীশ যখন নিজের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের উত্তরে সাঁতারুদের পরিশ্রম না করার কথা তুলেছিল, তখন হরিচরণ মন্তব্য করে যে, খাটার জন্য খাদ্য প্রয়োজন হয়। ঠিকমতো খাদ্য না পেলে পরিশ্রম করে যক্ষ্মা রোগের শিকার হয়ে কোনো লাভ নেই।

৫৫) 'এরা অকৃতজ্ঞ-ক্ষিতীশ কাদের কেন অকৃতজ্ঞ বলেছে?

উত্তর: শ্যামল, গোবিন্দ প্রমুখ সাঁতারুদের সম্পর্কে ক্ষিতীশ এ কথা বলেছিল। ক্ষিতীশের মতে তারা সাঁতারের জন্যই চাকরি পেয়েছে। অথচ সাঁতারের জন্য কিছুই করে না। রোজ খাওয়ার জন্য পাঁচ টাকা খরচ করা, ডিসিপ্লিন্ড জীবন কাটানো, নিয়মিত কঠিন ট্রেনিং করা-এই সবকিছুতেই এদের অনীহা।

৫৬) 'ছেলে ফেল করলে দোষটা মাস্টার মশায়েরও' -কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: জুপিটার ক্লাবের সাঁতারুদের অভিযোগের উত্তরে ক্ষিতীশ যখন জানায় যে, তারা যথেষ্ট পরিশ্রম করে না, অলস ও ফাঁকিবাজ-তখন ক্লাবের সদস্য কার্তিক সাহা ক্ষিতীশের দিকে আঙুল তুলে উক্তিটি করে। অর্থাৎ দোষ সমানভাবে কোচ হিসেবে ক্ষিতীশেরও।

৫৭) ট্রেনার হতে গেলে নামকরা সাঁতারু হতে হবে, এমন কোন কথা নেই'-এ কথার প্রমাণস্বরূপ ক্ষিতীশ যাঁদের নাম বলেছিল, তাঁদের নাম লেখো।

উত্তর: উক্ত কথাটির প্রমাণ হিসেবে পৃথিবীর কয়েকজন নামকরা কোচের নাম করেছিল ক্ষিতীশ। তাঁরা হলেন-ট্যালবট, কারলাইল, গ্যালাঘার, হেইন্স, কাউন্সিলম্যান প্রমুখ। 

৫৮) 'শত্রু-মিত্র বাছবিচার করে কি লাভ?'-কে, ক্ষিতীশকে কী পরামর্শ দিয়েছিল?

উত্তর: ভেলো ক্ষিতীশকে অ্যাপোলো ক্লাবে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। জুপিটার ক্লাব থেকে বিতাড়িত হয়েও ক্ষিতীশ চিরশত্রু অ্যাপোলো ক্লাবে যেতে চায়নি। তাই ভেলো তাকে বোঝায় যে, সেখানে সে শেখাবার মতো ছেলেমেয়ে ও কাজ পাবে।

৫৯) এই দ্বিতীয়বার সে ওকে দেখলে'- কোথায় কোথায় ক্ষিতীশ কোনিকে দেখেছিলেন?

উত্তর: ক্ষিতীশ কোনিকে প্রথমবার দেখেছিলেন বাবুণীর আম সংগ্রহ করতে গঙ্গায় এবং দ্বিতীয়বার নেতাজি বালক সংঘের কুড়ি ঘণ্টা অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে।

৬০) 'একে স্পোর্ট বলতে ক্ষিতীশের ভীষণ আপত্তি-কাকে, কেন স্পোর্ট বলতে ক্ষিতীশের আপত্তি ছিল?

 উত্তর: অবিরাম হাঁটা বিষয়টিতে বুদ্ধি লাগে না। গতি লাগে না। পেশির জোর প্রয়োজন হয় না। অন্য কারও সঙ্গে পাল্লা দিতেও হয় না। তাই বলদের মতো শুধু এই পাক খাওয়াকে নর স্পোর্ট বলতে ক্ষিতীশের আপত্তি আছে।

৬১) 'বিন্টু ধর অসহায়ভাবে পিছনে তাকাল'- তার বিষ্ণু ধরের অসহায়তার কারণ কী ছিল?

উত্তর: নেতাজি বালক সংঘের অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতার ন শেষে সভাপতি বিন্টু ধর বক্তৃতা দিতে ওঠেন। সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা কবিতা বলবেন বলে প্রস্তুত হলেও কার্যক্ষেত্রে তিনি সেটা খুঁজে না পেয়ে অসহায়ভাবে পিছনে তাকিয়েছিলেন। 

৬২) অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতার পুরস্কার কী ছিল?

 উত্তর: অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় যারা ২০ ঘণ্টা হেঁটেছে তাদের পুরস্কার ছিল প্লাস্টিকের কিট ব্যাগ ও তোয়ালে; ১৬ ঘণ্টার পরে যারা অবসর নিয়েছে তাদের জন্য শুধু ব্যাগ ও ১২ ঘণ্টার পরে যারা তাদের জন্য ছিল তোয়ালে।

 ৬৩) 'চ বাড়ি যাই, এটা মাকে দিতে হবে'- এ কোনি এ কথা বলার কারণ কী?

 উত্তর: কোনি অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার - জন্য সারাদিন বাড়ি ফিরতে পারেনি। তাই তার মা অত্যন্ত রাগ করেছিলেন। মায়ের রাগ শান্ত করার জন্য সে প্রতিযোগিতা থেকে পাওয়া ব্যাগ, তোয়ালে ও খাবার নিয়ে গিয়েছিল।

৬৪ ক্ষিতীশের বাজারে যাওয়া ও আসার পথের বিবরণ দাও।

উত্তর: ক্ষিতীশ বাজারে যায় বাড়ির কাছের বস্তির সরু গলি দিয়ে, আর ফেরে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে চিলড্রেনস পার্কটাকে ঘুরে অন্য একটি পথ ধরে।

৬৫) নেতাজি বালক সংঘের উদ্যোগে অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতার বর্ণনা দাও।

উত্তর: প্রতিযোগিতা যেদিন রাত আটটায় শুরু হয়, তার পরদিন বিকেল চারটেয় শেষ হয়। উদ্বোধন করেন প্রাক্তন ফুটবলার শ্রীকৃষ্ণপ্রসাদ মাইতি। পুরস্কার বিতরণ করেন সংঘের পৃষ্ঠপোষক শ্রীবিষ্ণুচরণ ধর। এই প্রতিযোগিতায় বাইশ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল।৬৬) হাঁটা প্রতিযোগিতায় কোনির পোশাক- আশাকের বর্ণনা দাও।

উত্তর: হাঁটা প্রতিযোগিতায় কোনির পরনে ছিল ঢিলে ফুলপ্যান্ট, ঢলঢলে বুশশার্ট, পায়ে হাওয়াই চটি। চুলটা ছেলেদের মতো হলেও ঘাড়ের কিনারে পৌঁছে গেছে। 

৬৭) যে পার্কে হাঁটা প্রতিযোগিতা হচ্ছিল, সেটি কীরকম ছিল?

উত্তর: যে পার্কে হাঁটা প্রতিযোগিতা হচ্ছিল, সেই গোলাকৃতি ব পার্কটিকে ঘিরে রেলিং দেওয়া। তার থেকে ছয় হাত ভিতরে হাঁ সিমেন্টের পথটা বেড় দিয়েছে মাঝখানের ঘাসজমিকে। রোদে উত্তপ্ত এই সিমেন্টের উপর দিয়েই প্রতিযোগীদের হাঁটতে হচ্ছিল। 

৬৮) 'ভয়ংকর এই শেষের ছ'ঘণ্টা। টিকতে পারবে কী?'-এ কথা ভাবার কারণ কী?

উত্তর: কুড়ি ঘণ্টা অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় শেষ ছ'ঘণ্টা এ কোনি টিকে থাকতে পারবে কিনা, এই প্রশ্ন ক্ষিতীশের মনে ন জেগেছিল। কারণ এই প্রতিযোগিতা থেকেই সে কোনির ধৈর্য, নি সহনশীলতা, একগুঁয়েমি ও অধ্যবসায় যাচাই করে নিতে চেয়েছিল।। 

৬৯) 'কেন মনে হল, ক্ষিতীশ তা ব্যাখ্যা করতে পারবে না'-কী মনে হওয়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: কুড়ি ঘণ্টা অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় কোনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেও যেভাবে মাথা তুলে পাতলা দেহটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তা দেখে ক্ষিতীশের মনে হয়েছিল আকাশ থেকে আগুন ঝরলেও কোনির চলা থামবে না।

৭০) 'তার পিছনে বসে আজকের সভাপতি'- সভাপতির পরিচয় দাও।

উত্তর: নেতাজি বালক সংঘের অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় সভাপতি ছিলেন গঙ্গার ঘাটে ক্ষিতীশের সঙ্গে পরিচিত হওয়া বিষ্ণুচরণ ধর। বিষ্ণুচরণ আই. এ. পাস, বনেদি বংশের মানুষ। তার সাতটি বাড়ি ও বড়োবাজারে ঝাড়ন মশলার ব্যাবসা আছে। তার দেহের ওজন সাড়ে তিন মণ।

৭১) 'বোগাস ব্যাপার'-কোন্ ব্যাপারকে বোগাস বলা হয়েছে?

উত্তর: কুড়ি ঘণ্টা অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতা বিষয়টিকে বোগাস বলা হয়েছে। কোনি ও তার বন্ধুরা এই আলোচনা করছিল যে, এই প্রতিযোগিতায় ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড নেই; এ ছাড়া তারা ভেবেছিল প্রতিযোগিতা চলাকালীন অনেকে জামায় টাকা আটকে দিয়ে যাবে, যা ঘটেনি। তাই একে বোগাস বলা হয়েছে।

৭২) হাঁটা প্রতিযোগিতায় নাম দেওয়ার জন্য কোনির বাড়ির পরিস্থিতি কীরূপ হয়েছিল?

উত্তর: হাঁটা প্রতিযোগিতায় নাম দেওয়ার জন্য কোনিকে পুরো একদিন বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছিল। তাই তার মা বলেছিলেন যে, পিটিয়ে তার চামড়া তুলে নেবেন। কিন্তু কোনির দাদা এই নিয়ে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বলেছিল, কোনি বেশ করেছে।

৭৩) 'এটা সমাজসেবার কাজ'-কোন্ কাজকে সমাজসেবার কাজ বলা হয়েছে?

উত্তর: হাঁটা প্রতিযোগিতার শেষে পুরস্কার বিতরণী সভায় বক্তৃতা। দিতে গিয়ে বিষ্ণুচরণ ধর ক্ষিতীশের কথার অনুকরণে এইসব কথা বলেছিল। ব্যায়াম যে কত উপকারী, তা বলার পর সে এইধরনের হাঁটা প্রতিযোগিতাকে সমাজসেবার কাজ বলে উল্লেখ করে।

৭৪) 'আপনাকে সব বলছি-বিষ্ণুচরণ ক্ষিতীশকে কী কী কথা বলেছিল?

উত্তর বিচরণ ক্ষিতীশকে নিজের গাড়িতে বসিয়ে জানিয়েছিল যে, সে আগামী সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়াবে; তাই এখন থেকেই সে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় নানা অনুষ্ঠানে সে টাকা দিচ্ছে ও সভাপতি হয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে। নির্দল সমাজসেবক হিসেবে সে ভোট চাইবে।

৭৫) 'খেলা নিয়েই বক্তৃতা দিতে চাই'-বিষ্ণুচরণ খেলা নিয়ে বক্তৃতা দিতে চায় কেন?

উত্তর: বিষ্ণুচরণ খেলা নিয়েই বক্তৃতা দিতে চায়, কারণ সে আগামী সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়াবে। তার বিরোধী বিনোদ ভড় হচ্ছেন এম এল এ এবং খেলার লাইনের লোক। তাই বিষ্ণুও খেলার লাইন ধরেই প্রচার করতে চায়।

৭৬) 'এইসব অবিরাম ব্যাপারগুলোর মধ্য দিয়ে কার কেমন সহ্যশীলতা কেমন একগুঁয়েমি সেটা বোঝা যায়'-কীভাবে তা বোঝা যায়?

উত্তর: অবিরাম বা একটানা প্রতিযোগিতাগুলির মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণকারীর ধৈর্য, সহনশীলতা ও অধ্যবসায় উপলব্ধি করা যায়। কারণ ব্যক্তিত্বে ও চরিত্রে ওইসব গুণাবলি না থাকলে কখনোই অবিরাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই ক্রিয়াকর্ম করে যাওয়া যায় না।

৭৭) একটা লোক নিজের সম্পর্কে কী ভাবে, সেটা বোঝা যায় চলার সময় মাথাটা সে কেমনভাবে রাখে তাই দেখে'-ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: এই বিষয়টির একটি মনস্তাত্ত্বিক দিক রয়েছে। যে ব্যক্তি আত্মবিশ্বাসী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী, সে সর্বদা পথ চলে মাথা সোজা রেখে ও সামনের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগা দুর্বল চরিত্রের মানুষ মাথা নিচু করে পথ চলে।

৭৮) 'নেতৃত্ব দিতে হলে সামনে থাকতে হয়'-এর কারণ কী? 

উত্তর: দলনেতা বা নেত্রী একাধারে পথপ্রদর্শক, অগ্রদূত ও প্রেরণার উৎস। তাই তাকে সকলের সম্মুখে থাকতে হয়, যাতে তার বক্তব্য ও দেহভঙ্গিমা সকলের শ্রুতি ও দৃষ্টিগোচর হতে পারে। এইজন্য নেতৃত্ব দিতে হলে সামনে থাকতে হয়।

৭৯) রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতার দূরত্ব ও প্রতিযোগীর সংখ্যা কত ছিল?

 উত্তর: রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতার দূরত্ব ছিল এক মাইল ও প্রতিযোগী ছিল পঁচিশ জন। বাইশ জন ছেলে ও তিনটি মেয়ে।

৮০ রবীন্দ্র সরোবরে সাঁতার প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা কারা ছিল? ক্ষিতীশ সেখানে কোন্ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন? 

উত্তর: রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা ছিল ঢাকুরিয়া স্পোর্টস ক্লাব। ক্ষিতীশ সেখানে রেফারি অফ দ্য প্রতি কোর্স হয়েছিলেন।

নীচের প্রশ্নগুলির কম-বেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে উত্তর লেখো 

১) বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটের দৃশ্য বর্ণনা করো।

উত্তর: বারুণী হল হিন্দু ধর্মের এক ধর্মীয় উৎসব, যেদিন গঙ্গায় পূজা দিয়ে কাঁচা আম বিসর্জন দেওয়া হয়। এমনই এক দিনে গঙ্গার ঘাটের দৃশ্য দিয়ে 'কোনি' উপন্যাস শুরু হয়। উপন্যাসের শুরুতেই আমরা দেখি, গঙ্গার ঘাট ভিড়ে থইথই; বয়স্করা গঙ্গায় ডুব দিয়ে কাঁচা আম বিসর্জন দিচ্ছেন। ছোটো ছেলেরা আম দেখলেই হুড়োহুড়ি করে জলে নেমে তা সংগ্রহ করছে এবং প্রথমে আম প্যান্টের পকেটে ও পরে পকেট ভরে গেলে ঘাটে কোথাও রেখে আসছে। সেই আম পরে কম দামে বাজারে বিক্রি করবে। স্নান করে মানুষজন কাদা মাড়িয়ে ঘাটে উঠে আসতে বিরক্তিবোধ করছেন। তারপর অনেকে ঘাটের মাথায়, ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসা বামুনদের কাছে যায়।

তারা পয়সা নিয়ে জামাকাপড় জমা রাখে, গায়ে মাখার সরষে বা নারকেল তেল দেয় এবং কপালে চন্দনের ছাপ এঁকে দেয়। রাস্তার পাশে বসে থাকে ভিখারির দল। অনেকে দুধারের ছোটো ছোটো দেবদেবীর দুয়ারে ও শিবলিঙ্গের মাথায় ঘটি থেকে গঙ্গা জল দেন। এরপর আশেপাশের কাঠের, প্লাস্টিকের, লোহার, খেলনার ও সাংসারিক সামগ্রীর দোকানগুলি দেখতে দেখতে তারা বাড়ির দিকে এগোন। রাস্তায় বাজার থেকে ওল, থোড় অথবা কলম্বা লেবু কিনতে পারেন। রোদে গরম হয়ে ওঠা রাস্তায় খালি-পা ফেলে তাড়াতাড়ি তারা বাড়ির দিকে পা বাড়ান।

২) বিষ্ণুচরণ ধরের পরিচয় দাও। তার খাদ্যাভ্যাসের বিবরণ দাও।

উত্তর: বিষ্ণুচরণ ধর পাড়ার একজন বেশ মান্যগণ্য ব্যক্তি। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয়ে তিনি সভাপতির পদ অলংকৃত করে থাকেন। আসন্ন নির্বাচনে দাঁড়াবারও সদিচ্ছা তাঁর রয়েছে। পাড়াতে তিনি বেষ্টাদা নামেই পরিচিত। অত্যন্ত বনেদি বংশের সন্তান বিন্টুচরণ আই.এ. পাস। তাঁর প্রায় সাতটি বাড়ি রয়েছে। বড়োবাজারে ঝাড়ন-মশলার কারবার রয়েছে বিষ্ণুচরণের। বছর চল্লিশ বয়সেই তাঁর দেহের আয়তন সাড়ে তিন মণ। তাঁর একটি অস্টিন গাড়ি আছে, যেটিতে করেই তিনি যাতায়াত করে থাকেন। বিষ্ণুচরণের শখ হল গঙ্গার ঘাটে মালিশওয়ালাকে দিয়ে মালিশ করানো।

বিন্টুচরণের ওজন তিন মণ হয়ে যাওয়াতে তিনি খাওয়ার লোভ সংবরণ করেছেন এবং ডায়েটিং শুরু করেছেন। আগে তার প্রতিদিন জলখাবারে কুড়িটা লুচি লাগত; সেইসঙ্গে আধ কিলো ক্ষীরও খেতেন। কিন্তু এখন আধ কিলো ক্ষীর তিনশো গ্রামে নামিয়ে এনেছেন। জলখাবারে এখন লুচি খান পনেরোটা। দুপুরে ভাত খান আড়াইশো গ্রাম চালের আর গরম ভাতের সঙ্গে চার চামচ ঘি। বিকেলে দু'গ্লাস মিছরির সরবত আর চারটে কড়াপাকের সন্দেশ। রাতে বিক্ষুচরণ খান বারোটা বুটি। যদিও তিনি মাছ-মাংস খান না।

৩) 'মা গঙ্গাকে উচ্ছ্বগ্নো করা আমই রাস্তায় বসে বেচবে'-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: মতি নন্দী রচিত 'কোনি' উপন্যাসের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে গঙ্গার ঘাটে স্নানরত এক বৃদ্ধের মুখে এই উক্তি শুনতে পাওয়া যায়। বারুণী উৎসবে মা গঙ্গাকে যে কাঁচা আম উৎসর্গ করা হয়ে থাকে, নিম্নবিত্ত পরিবারের কিছু ছোটো ছেলে সেগুলি সংগ্রহ করে ও কম দামে বাজারে বিক্রি করে। আম সংগ্রহ করা নিয়ে তাদের মধ্যে ছোটোখাটো গন্ডগোলও বেধে থাকে। এমনই এক পটভূমিকায় কোনিকে প্রথম দেখেছিল ক্ষিতীশ। কোনি এবং তার বন্ধুদের বিবাদ লক্ষ করেই বৃদ্ধের এই উক্তি।

গঙ্গায় স্নানরত বৃদ্ধের উক্তির মধ্যে দু'ধরনের মানসিকতা লক্ষ করা যায়। প্রথমত বর্ণ হিন্দু অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনি-সহ নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের নীচু দৃষ্টিতে দেখার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। দ্বিতীয়ত কোনি মেয়ে হয়ে অন্য ছেলেদের সঙ্গে মারামারি করে বেড়াচ্ছে দেখে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভর্ৎসনার সুর ধ্বনিত হয়েছে। এই দুই ক্ষেত্রেই সামাজিক সংস্কার বৃদ্ধের মনে বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছে। লেখক বৃদ্ধের মুখে এই উক্তিটুকু বসিয়ে সমকালীন সামাজিক পরিস্থিতির একটা হদিস দিতে চেয়েছেন। অন্যদিকে হিন্দুধর্মে দেবী বলে পূজিতা গঙ্গাকে উৎসর্গ করা আম পুনরায় বিক্রি করার মধ্যে হিন্দুধর্মের পাপপুণ্যের যে ধারণা রয়েছে, তাকেও এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

৪) ক্ষিতীশের বাড়িটির বর্ণনা দাও। তার শোবার ঘর ও তার পাশের ঘরটি কীরূপ ছিল?

উত্তর: গঙ্গা থেকে মিনিট পনেরো দূরত্বে সরু গলির মধ্যে ক্ষিতীশের একতলা টালির চালের বাড়ি। বাড়ির সদর দরজার পরই মাটির উঠোন। উঠোনের যা আয়তন, তাতে টেনেটুনে একটি ভলিবল কোর্ট তাতে ধরে যায়। উঠোনে লঙ্কা, পেঁপে, চালকুমড়ো ইত্যাদি আনাজ ও জবাফুলের গাছে ভরতি। একদিকে টিনের চালের রান্নাঘর ও কলঘর, অন্য একদিকে দালান ও তার পিছনে দুটি ঘর। চারদিকের উঁচু বাড়িগুলির মধ্যে এই একতলা বাড়িটিকে খুব শান্ত দেখায়। উত্তরদিকের উঁচু বাড়ির মালিক হলধর বর্ধন ক্ষিতীশের বাড়িটি বারবার কিনতে চাইলেও ক্ষিতীশ তাতে রাজি হয়নি।

ক্ষিতীশের শোওয়ার ঘরের দেয়ালে তার বাবা-মায়ের ছবি ছাড়াও ধ্যানমগ্ন মহাদেব, কুরুক্ষেত্রে অর্জুনের সারথি শ্রীকৃয়, ম্যাগাজিন থেকে কেটে বাঁধানো মেডেল গলায় ডন শোলান্ডার ও ভিকট্রি স্ট্যান্ডে দু'হাত তুলে দাঁড়ানো জন ফ্রেজারের ছবি পাশাপাশি টাঙ ানো। এ ছাড়াও আছে খাট, আলমারি, বাক্স, আলনা এবং নানারকম সাংসারিক জিনিস। তার পাশের ঘরে আছে বই, ম্যাগাজিন, একটা তক্তপোশ আর তার নীচে ট্রেনিংয়ের জন্য রবারের দড়ি, স্প্রিং ও লোহা ছাড়া তেমন কিছুই নেই। পাখা নেই, বিছানাও নেই।

৫) কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও।

উত্তর: কোনি অর্থাৎ কনকচাঁপা পালের সঙ্গে 'কোনি' উপন্যাসের পাঠকের প্রথম পরিচয় হয় বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটে। সেখানে তার অন্যদের সঙ্গে কাড়াকাড়ি করে আম সংগ্রহ করা দেখে ও সেই আম কম দামে বিক্রি করার উদ্দেশ্যের কথা জেনে কোনির পারিবারিক অবস্থার একটা আভাস পাঠকের চোখে ধরা পড়ে। পরবর্তী ক্ষেত্রে কোনির দাদা কমল পালের মুখ থেকে জানা যায় তাদের পারিবারিক জীবনের কাহিনি। শ্যামপুকুর বস্তির এঁদো গলির বাসিন্দা কোনি ও তার পরিবার। তারা সাত ভাই-বোন এবং মা আছেন। কমল বড়ো ছেলে, মেজো ভাই ট্রেনের ইলেকট্রিক তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে, সেজো ভাই কাঁচরাপাড়ায় পিসির বাড়িতে থাকে।

তারপর কোনি এবং কোনির পর আরও দু'বোন ও এক ভাই গোপাল। কমল রাজাবাজারে একটি মোটর গ্যারাজে কাজ করে দেড়শো টাকার মতো রোজগার করে। সে ভালো সাঁতার কাটত, কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। তাদের বাবা প্যাকিং কারখানায় কাজ করতেন কিন্তু তিনি যক্ষ্মা রোগে মারা গিয়েছেন। সংসার চালানোর জন্য কমল পরে এক ভাইকে পনেরো টাকা মাইনেয় চায়ের দোকানে কাজে দিয়েছিল। কোনিকেও ষাট টাকা মাইনের সুতোর কারখানায় কাজ করতে পাঠানোর কথা ভেবেছিল। সে ক্ষিতীশকে জানিয়েছিল যে, কোনির সাঁতারের জন্য সহযোগিতা করা ছাড়া সে আর কিছুই করতে পারবে না। ক্ষিতীশ কৌনির সব দায়িত্ব নেওয়ায় সে সাঁতার শেখার সুযোগ পায়। পরবর্তীকালে ক্ষিতীশ কোনির মা-কেও ছাঁট কাপড় কেটে দেওয়ার কাজ দিয়েছিল।

৬) 'হঠাৎ কোনির দু-চোখ জলে ভরে এল'-কোনির দু'চোখ জলে ভরে ওঠার কারণ কী? এরপরে কী ঘটেছিল?

উত্তর: রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত এক মাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় যে পঁচিশজন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছিল, তার মধ্যে একদিকে যেমন বালিগঞ্জ ক্লাবের অভিজাতবংশীয়া হিয়া মিত্র ছিল। অন্যদিকে তেমনই ছিল শ্যামপুকুর বস্তির কোনি। সাধারণ সাঁতারু কোনি নিজেকে উজাড় করেও টেকনিক জানা হিয়া মিত্রের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। কিন্তু দাদা কমলকে সে কথা দিয়েছিল যে, মেয়েদের মধ্যে সে প্রথম হবেই। সেই জন্য ধার করেও বারো টাকা দিয়ে কোনিকে সে একটি কস্টিউম কিনে দিয়েছিল। কোনি নিজের এই পরাজয় ও দাদাকে দেওয়া কথা না রাখতে পারার বেদনা মেনে নিতে পারেনি। তাই তার ভিতরে এক ধরনের ক্ষোভ ও আক্ষেপ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময়ে ক্ষিতীশের স্নেহভরা কণ্ঠস্বর ও সাঁতার শেখানোর প্রস্তাব তাকে দুর্বল করে দিয়েছিল। তার অন্তরের সমস্ত ক্ষোভ, লোভ, দুঃখ, অভিমান ও অশ্রু হয়ে চোখে দেখা দিয়েছিল।

এরপরেই যে ঘটনা ঘটেছিল, তা ছিল কোনির জীবনের সবচেয়ে দিশা-পরিবর্তনকারী ঘটনা। সাদাসিধে পরিবারের কোনি যথেষ্ট ভালো সাঁতার জানলেও, সে কোনোদিন কোনো প্রশিক্ষকের কাছে সাঁতার শেখার কথা ভাবেনি। সম্ভবত সাঁতার-প্রশিক্ষণ বিষয়ে তেমন কিছু তার জানাও ছিল না। কিন্তু তার জীবনের এই পর্যায়ে এসে সে ক্ষিতীশের মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষকের কাছে শেখার সুযোগ পায়, যে সুযোগ তাকে ধীরে ধীরে পৌঁছে দেয় সাফল্যের উত্তুঙ্গ শীর্ষে।

৭) 'ক্ষিদ্দা এবার আমরা কী খাব?' কার উক্তি? এই উক্তির আলোকে বক্তার পরিস্থিতির অসহায়তা বিশ্লেষণ করো।

 উত্তর: আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হল কোনি।

শ্যামপুকুর বস্তির বাসিন্দা কোনির পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল মানুষ ছিল তার দাদা কমল। একদা সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন দেখা কমল দারিদ্র্যের চাপে স্বপ্নের কণ্ঠ রোধ করে উপার্জনের সন্ধানে যোগ দেয় রাজাবাজারের একটি মোটর গ্যারেজে। সেখান থেকে কষ্টার্জিত দেড়শোটি টাকা ছিল তার সংসার চালাবার পাথেয়। দুবেলা দুমুঠো ভাত ছাড়া আর বিশেষ কিছুর সংস্থান তাতে হত না ঠিকই, কিন্তু প্রাণধারণটুকু হয়ে যেত। পরের দিকে কমল পরিবারের সচ্ছলতার উদ্দেশ্যে এক ভাইকে পনেরো টাকা মাইনের বিনিময়ে একটি চায়ের দোকানে কাজে ঢুকিয়েছিল।

কোনিকে ষাট টাকায় এক সুতো কারখানায় ঢোকাবার ইচ্ছে থাকলেও ক্ষিতীশ কোনিকে বড়ো সাঁতারু করার ইচ্ছে প্রকাশ করায় তা আর হয়ে ওঠেনি। ক্ষিতীশ কোনিকে প্রতিদিন খাওয়ার জন্য একটা টাকা দিত, তাও সংসারের পিছনেই খরচ হয়ে যেত। এহেন টানাটানির সংসারের প্রধান উপার্জনক্ষম কমল হঠাৎ যক্ষ্মারোগে ভুগে মারা গেলে পরিবারের বাকিদের অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে পড়ে। তাই মৃত্যুতে শোকপালনের আগে পরিবারের সব সদস্যের মনে যে প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিকভাবে আঘাত করে, সেটিই কোনির মুখ দিয়ে ক্ষিদ্দার উদ্দেশ্যে নির্গত হয়েছে- 'এবার আমরা কি খাব?"

৮) 'তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে।'-কোনির কোন্ কথার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলা হয়েছে? তার আসল লজ্জা ও আসল গর্ব জলে বলার কারণ কী?

 উত্তর: কোনিকে তৈরি করতে গিয়ে ক্ষিতীশকে যেমন বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে, কোনিকেও তেমন নানা কষ্টকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ধীরেন ঘোষ, বদু চাটুজ্জে, অমিয়া, হরিচরণ-এই সকল প্রতিপক্ষ প্রথমে বাইরে থেকে আঘাত হেনে ও পরে মানসিক আঘাতে তাদের মনোবল ভেঙে দিতে চেয়েছে। কখনো কোনিকে ক্লাবে ভরতি না করে, কখনো ডিসকোয়ালিফাই করে, কখনো বা প্রথম হওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় বলে ঘোষণা করে। যদিও এদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা ছিল মারাত্মক। বাইরের আঘাত সহ্য করা যতটা কঠিন, মনের আঘাত সহ্য করা কিন্তু আরও বেশি কঠিন। বারবার বাক্যবাণে কোনি ও ক্ষিতীশকে দুর্বল করে ফেলতে চেয়েছে তারা। এই জন্যই অমিয়া ক্ষিতীশের স্ত্রী লীলাবতীর দোকানে ব্লাউজ বানাতে এসে সকলের সামনে কোনিকে বলে-'তুই এখানে ঝিয়ের কাজ করিস?' উদ্ধত অমিয়ার এই উক্তিতে কোনি লজ্জা পেয়েছিল। পরে তার ক্ষিদ্দাকে সে এ কথা বলায় ক্ষিতীশ উত্তরে এই উক্তি করেছিল।

অমিয়ার ব্যঙ্গোক্তিতে কোনি অপমানিত ও লজ্জিত বোধ করায়, ক্ষিতীশ তাকে নিজের উপলব্ধি ব্যাখ্যা করে। সে তাকে বলে, তথাকথিত যে সমগ্র সামাজিক আঘাত ব্যক্তিমনে যন্ত্রণা দেয়; মানুষ হিসেবে নিজের কাছে নিজেকে লাঞ্ছিত করে। তাকে নিজের সাধনা দিয়ে জয় করতে হয়। সেই ক্ষমতাকে অর্জন করতে শিখতে হয়। সাধনার দ্বারা অর্জিত সেই সিদ্ধি শুধু নিজের সম্মান বাড়ায় না, তাতে সমস্ত মানবজাতির মানসম্মান বাড়ে।

অন্যভাবে বলতে গেলে, কোনির আসল পরিচয় হল সে সাঁতারু। তার ক্ষমতা দেখানোর ক্ষেত্র হল জল। তাই সাঁতারের হার-জিতই তার লজ্জা বা গর্ব নির্ধারণ করবে। তার লজ্জা মানবজাতির লজ্জা, তার গর্ব মানবজাতির গর্বে পরিণত হবে। কারণ কোনিকে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে সমগ্র মনুষ্যত্বের, ইতিহাসের পৃষ্ঠায় তার জয় মানবজাতির জয় হিসেবে বর্ণিত হবে। এক-একটা রেকর্ড ভাঙার অর্থ মানুষের মুক্তির পথে আরও একটু এগিয়ে যাওয়া, নির্ধারিত গণ্ডিকে অতিক্রম করে আলোর গতিবেগকেও হার মানানো।

৯) কোনির জীবনে ক্ষিদ্দার অবদান আলোচনা করো।

উত্তর: সাধারণ এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে থেকে নিজের একগুঁয়েমি, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়কে পাথেয় করে কোনির যে কাঙ্ক্ষিত উচ্চতায় উত্তরণ, এর পিছনে যে মানুষটির অবদান অনস্বীকার্য, তিনি হলেন কোনির ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ।

প্রতিভা থাকলে মানুষের উত্থান কোনো অলৌকিক বিষয় নয়, তা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রতিভাকে চিনে নিয়ে তাকে সুশৃঙ্খল প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে চালনা করতে প্রয়োজন হয় জহুরি দৃষ্টি, যা ক্ষিতীশের ছিল। ক্ষিতীশ ছিল জন্মসূত্রেই খেলার মানুষ। তাই দেশের জন্য গৌরব এনে দেওয়া একজন খেলোয়াড় তৈরি করতে সে জলের মতো অর্থব্যয় করেছে। নিজের রোজগার বা অন্য কোনো স্বার্থের জন্য নয়, কোনিকে সে শিক্ষা দিয়েছে কেবল একজন সুযোগ্য শিষ্য ও ভারতমাতার যশবৃদ্ধির সহায়ক একজন খেলোয়াড় তৈরির জন্য।

নিজের সংসারে অভাব সত্ত্বেও সে কোনির খাওয়া-ঘুমের দায়িত্ব নিয়েছে। কোনি অনিচ্ছুক হলেও তাকে দিয়ে প্রবল পরিশ্রম করিয়েছে। আবার বড়োদাদার মতো তাকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে গেছে, কুমির দেখাতে। যে ক্ষিদ্দা কোনি কেঁদে ফেললেও প্র্যাকটিস থেকে রেহাই দেয়নি; খাওয়ার টোপ দিয়ে সাঁতার কাটানোর মতো নৃশংস আচরণ করেছে, সেই আবার কোনি ঘুমিয়ে পড়লে তার মাথায় হাত বুলিয়েছে; ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে কোনি নিজেকে প্রমাণ করার পর কৌনির মাথার উপর নিজের আনন্দাশ্রু বর্ষণ করেছে।

১০) 'কোনি'-র চরিত্রটি আলোচনা করো।

উত্তর: যে চরিত্রের নামে লেখক উপন্যাসের নামকরণ করেন, সেই চরিত্রটিকে বেষ্টন করেই যে উপন্যাসের গল্প আবর্তিত হবে, তা বলাই বাহুল্য। 'কোনি' উপন্যাসেও এক সাধারণ হতদরিদ্র পরিবারের কন্যা কোনি শত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেও কীভাবে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য লাভ করে, তারই আখ্যান শুনতে পাওয়া যায়। কোনি সামাজিক পরিচয়ে সাধারণ হলেও তার মধ্যে যে সকল প্রবৃত্তি ছিল, যেমন-ঔদ্ধত্য, একগুঁয়েমি, জেদ, প্রতিশোধস্পৃহা-অন্যের চোখে এগুলি যতই দোষের হোক না কেন, ক্ষিতীশের চোখে এগুলিই তাকে ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য দান করেছে।

আমের দখল নেওয়ার জন্য কোনি কামড়ে ভাদুর হাতে গর্ত করে দিয়েছে, লোকে খুশি হয়ে টাকা দেবে সেই আশায় সে কুড়ি ঘণ্টা অবিরাম হেঁটেছে, দাদাকে খুশি করার জন্য প্রাণপণ সাঁতার কেটে কেবল প্রশিক্ষণের অভাবে হেরেছে, হিয়া মিত্রের কাছে হেরে গিয়েছিল বলে তার দেওয়া পানীয় জল ফেলে দিয়েছে, অবশেষে হিয়ার অপরাধে সে চড় খেয়েছে বলে হিয়াকে সেই চড়ও সে ফিরিয়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে এই কোনিই-ই দাদার মৃত্যুর পর ঘুমের ঘোরে দাদার কাছে কুমির দেখার বায়না করে, জীবনে প্রথমবার মাদ্রাজ যাওয়ার সময় ভয়ে কেঁদে ফেলে ও ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পরে তার ক্ষিদ্দার বুকে মাথা রেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে। অর্থাৎ কোনির বাইরের কাঠিন্য আসলে তার খোলস। বহু প্রত্যাখ্যান, বহু ব্যর্থতা তাকে জীবনের সারসত্য শিখিয়ে দিয়েছিল-'বড়লোকেরা গরীবদের ঘেন্না করে।' তার জীবনের মূল দুর্বলতা ছিল হিয়া মিত্রের নাম, যার কাছে প্রথমবার তাকে পরাজয়ের স্বাদ পেতে হয়েছিল। এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েই ক্ষিতীশ কোনির ভিতরকার সেরাটা বের করে এনেছিল। ক্ষিতীশ যে সুযোগ্য শিষ্যের সন্ধানে ছিল, কোনি ছিল তারই অবিকল প্রতিরূপ। কাজেই কোনি চরিত্র উপন্যাসটিকে এক নিগূঢ় বৈশিষ্ট্য দান করেছে।

১১) হিয়া মিত্রের চরিত্র আলোচনা করো।

উত্তর: হিয়া মিত্র অভিজাত বিত্তবান পরিবারের সন্তান। কোনির মতো দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চ্যালেঞ্জ তাকে নিতে হয়নি। বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রণবেন্দু বিশ্বাসের মতো কোচ পেতে তাকে কোনো লড়াই জিততে হয়নি।

সে নামি স্কুলের ছাত্রী, সর্বদা গাড়িতে চলাফেরা করে। বাবা-মায়ের অকুণ্ঠ সহযোগিতা ও আদর তাকে তার উদ্দেশ্যে স্থির রেখেছে। একাধিক দামি কস্টিউম, ইংরেজি কমিকসের বই, চকোলেট তার ভ্রমণসঙ্গী। হিয়ার সঙ্গে কোনির প্রথম দেখা রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতায়; যেখানে কোনিকে সে চিনতও না পর্যন্ত, তাকে অবলীলায় পরাজিত করতে হিয়াকে কোনো কষ্ট করতে হয়নি।

বিত্তবান পরিবারের মেয়ে হলেও হিয়া মাটিতে পা রেখে চলতে জানে। অমিয়ার মতো তাকে কখনও অপমানজনক মন্তব্য করতে শোনা যায় না। মজা করে বেলার ক্রিমের কৌটো থেকে ক্রিম নিয়ে নিজে মেখে কোনির গালে লাগিয়ে দিতেও তার এতটুকু দ্বিধা নেই। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনির কাছে তাকে চড়ও খেতে হয়। তারপরেও ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে রিলে রেসে অমিয়ার পরিবর্ত হিসেবে কোনিকে ডাকতে সে ছুটে আসে। গোটা উপন্যাসে তার মুখে কোনির বিরুদ্ধে কেবল দুটি কথা শোনা যায়। প্রথম, 'অত হিংসে ভাল নয়' এবং দ্বিতীয় যখন কোনি রিলে নামতে রাজি হয় না তখন 'কোনি তুমি আনস্পোরটিং'। হিয়া ছিল কোনির দুর্বলতা। হিয়াকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যেই যেন কোনির সাফল্যের সূত্রপাত। তাই কোনির উত্থানের পিছনে হিয়া মিত্রের পরোক্ষ অবদানও অস্বীকার করা যায় না।

আরও পড়ুন দশম শ্রেণীর বাংলা-

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area