Ads Area


অভিযোজন কৌশল || অভিযোজন কী || Adaptation Strategy pdf

অভিযোজন কৌশল || অভিযোজন কী || Adaptation Strategy

অভিযোজন কৌশল || অভিযোজন কী || Adaptation Strategy pdf
অভিযোজন কৌশল

অভিযােজন (Adaptation)

সংজ্ঞা: কোন জীব পরিবর্তিত পরিবেশে সুস্থ্য এবং স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য এবং বংশবৃদ্ধির জন্য আংশিক বা সামগ্রিক গঠনগত, আচরণগত এবং শারীরবৃত্তীয় স্থায়ী পরিবর্তন করে । যাদের একত্রে জীবটির অভিযােজনগত বৈশিষ্ট্য বলে । এই ঘটনাকে অভিযােজন বলা হয় । অভিযােজিত বৈশিষ্ট্যগুলি বংশ পরম্পরায় সারিত হয় ।


অভিযােজনের উদ্দেশ্য:

(i) পরিবর্তিত পরিবেশে জীবকে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার উপযােগী করে তােলে ।

(ii) নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে ।

(iii) আত্মরক্ষা করতে পারে ।

(iv) অভিব্যক্তিকে ত্বরান্বিত করে ।


মুখ্য অভিযােজন: 

উদ্বংশীয় জীবেরা যে পরিবেশে উৎপন্ন হয়েছিল সেই পরিবেশেই আরাে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য এবং বংশবিস্তারের জন্য জীবেদের যে গঠনগত, আচরণগত এবং শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে তাদের এবাত্রে মুখ, বা প্রাথমিক অভিযােজন বলে । যেমন- মাছের অভিযোজন ।


গৌণ অভিযােজন:

উদ্বংশীয় জীবেরা যে পরিবেশে উৎপন্ন হয়েছিল সেই পরিবেশ ছেড়ে খাদ্য, বাসস্থান এবং অন্যান্য প্রয়ােজনে অন্য পরিবেশে এসে জীবের গঠনগত, আচরণগত এবং শারীরবৃত্তীয় যে সমস্ত পরিবর্তন ঘটে তাদের একত্রে গৌণ অভিযােজন বলে । যেমন- তিমি এবং কুমিরের অভিযােজন ।


অপসারি অভিযােজন: 

একই গােষ্ঠীভূত জীব খাদ্য, বাসস্থান বা অন্যান্য প্রয়ােজনে মূল পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভিন্ন ভিন্ন নতুন পরিবেশে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য এবং বংশবৃদ্ধির জন্য জীবগুলি প্রয়ােজনানুসারে গঠনগত, ভাচরণগত এবং শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন দেখা যায়, অর্থাৎ অভিযােজন ঘটে । জীবগুলির এইরূপ অভিযােজনকে অপসারী অভিযােজন বলে । যেমন- তিমি এবং মানুষের অভিযােজন ।


অভিসারী অভিযােজন: 

বিভিন্ন দুঃসম্পর্কিত জীবগােষ্ঠী খাদ্য, বাসস্থান বা অন্যান্য প্রয়ােজনে নিজ নিজ পরিবেশ ছেড়ে একই পরিবেশে বসবাসের দরুণ তাদের গঠনগত, আচরণগত এবং শারীরবৃত্তীয় যে সমস্ত পরিবর্তন দেখা যায়, অথাৎ অভিযোজন ঘটে । জীবগুলির এইরূপ অভিযোজনাকে অভিসারী অভিযােজন বলে । যেমন- ফড়িং ও বাদুড়ের আভিযােজন ।


দ্বি-অভিযােজন: 

দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশ বসবাস করার দরুণ কিছু কিছু জীবের দুটি পরিবেশের উপযোগী অভিযােজন সংঘটিত হয় । এই রূপ অভিযোজনকে দ্বি-অভিযােজন বলে । যেমন- কুমিরের অভিযোজন ।


অভিযােজিত বিকিরণ: 

একই উদংশীয় জীব থেকে উদ্ভূত কোনাে জীবগােষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বসবাস করার দরুণ তাদের ঐ সমস্ত পরিবেশের উপযােগী অভিযােজন পরিলক্ষিত হয় । এইরূপ অভিযােজনকে অভিযােজিত বিকিরণ বলে । যেমন- ব্যাং -এর অভিযােজন ।

সুন্দরী গাছের অঙ্গ সংস্থানগত, আভ্যন্তরীণ ও শারীরবৃত্তীয় অভিযােজনগুলি লেখ ।

সুন্দরী এক প্রকার লবণাম্বু উদ্ভিদ । এদের মধ্যে স্থলজ ও জাঙ্গল উভয় প্রকার উদ্ভিদেরই বৈশিষ্ট্য দেখা যায় ।

বসতি: সুন্দরী, গরাণ, গোঁওয়া প্রভৃতি লবণাম্বু উদ্ভিদেরা নদীর মােহনা বা সমুদ্র উপকূলবর্তী লবণাক্ত মাটিতে জন্মায় ।

মাটির বৈশিষ্ট্য: মাটিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে এবং O2 এর পরিমাণ প্রায় থাকে না । মৃত্তিকাস্থিত জলে লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় উদ্ভিদ এই মাটি থেকে অন্তঃঅভিস্রবণ পদ্ধতিতে জল শােষণ করতে পারে না । এই ধরণের মাটিকে শারীরবৃত্তীয় শুদ্ধ মৃত্তিকা বলে ।

সুন্দরীগাছের শারীরবৃত্তীয় অভিযােজন
অঙ্গ বৈশিষ্ট্য গুরুত্ব
মূল ঠেসমূল ও অধিমূল যান্ত্রিক দৃঢ়তা প্রদান করে । জোয়ার ভাটার টানে উপড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায় ।
কাণ্ড কাণ্ডে মিউসিলেজ যুক্ত জলসঞ্চয়ী কলা থাকে । জল সঞ্চয় ও সংরক্ষণে সাহায্য করে ।
পাতা পাতায় কিউটিকেল, পত্ররন্ধ্র এবং নিমজ্জিত থাকে । বাষ্পোোমােচন কম হয় ।



প্রয়ােজনীয় তথ্যাদি

  • পরিবেশের ভিত্তিতে প্রাণীর অভিযােজন সাত প্রকার- 
(i) জলজ অভিযােজন
(ii) মরু অভিযােজন
(iii) দ্রুত গতি সম্পন্ন স্থলজ অভিযােজন
(iv) গুহাবাসী অভিযােজন
(v) ভূনিম্নবাসী অভিযােজন
(vi) বৃক্ষবাসী অভিযােজন
(vii) খেচর অভিযােজন

  • মাছ মুখ্য জলজ অভিযােজন দেখায় ।
  • তিমি, ডলফিন গৌণ জলজ অভিযােজন দেখায় ।
  • পক্ষী, বাদুড় সক্রিয় উড্ডয়ন দেখায় ।
  • উড়ুক্ক মাছ, উড়ুক্ক সরীসৃপ নিষ্ক্রিয় উড্ডয়ন দেখায় ।
  • খেচর প্রাণীর উল্লম্ফন স্থান এবং অবতরণ স্থান দুটির সংযুক্ত কাল্পনিক রেখা যদি ভূ-পৃষ্ঠের সাথে 45° কোণের কম কোণ উৎপন্ন করে, তাকে গ্লাইডিং বলে, এবং বেশি হলে তাকে প্যারাসুটিং বা মােরিং বলে ।
  • বাদুড়, পাখি মুখ্য খেচর অভিযােজন দেখায় ।
  • উড়ুক্ক মাছ, উড়ুক্ক সরীসৃপ গৌণ খেচর অভিযােজন দেখায় ।
  • মরু অভিযােজন সম্পন্ন উটে জল সংরক্ষণের জন্য দেহত্বকের নীচে ফ্যাটের আবরণ থাকে যা জলের বাষ্পীভবন প্রতিরােধ করে, মল এবং মূত্রের সাথে জল নিষ্কাষণে বাধা দেয় । নিঃশ্বাসের সাথে জলীয়বাষ্প নিষ্কাশনে বাধা দেয় ।
  • মরুবাসী জীবেদের দেহ মােটা চামড়া, চামড়ার নীচে চর্বির স্তর, আঁশ বা কণ্টকে ঢাকা থাকে ফলে অত্যধিক উত্তাপ বা শীতে জীবেরা নিজেদের রক্ষা করে ।
  • মরুবাসী প্রাণী যেমন উটের পা এবং গ্রীবা লম্বা হওয়ায় বালির প্রচণ্ড উত্তাপ থেকে মস্তিষ্ক রক্ষা পায় ।
  • বালুঝড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উটে যে সমস্ত অভিযােজনগত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়- বহিঃনাসারন্ধ্রে কপাটিকা বর্তমান, চোখের নেত্রপল্লবের কিনারায় ঘন লােম বর্তমান, কর্ণছিদ্রে ঘন লােম বর্তমান । 
  • ফণিমনসার কাণ্ডকে পর্ণকাণ্ড বলে ।
  • জাঙ্গল উদ্ভিদকে মরুভূমির উদ্ভিদগগাষ্ঠী বলা হয় ।
  • লবণাম্বু উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্কুরােদ্গম দেখা যায় । ব্যতিক্রম সুন্দরী গাছ ।
  • পায়রার ডানায় 23 টি রেমিজেস পালক দেখা যায় ।
  • পায়রার পাচ্ছে 12 টি রেট্রিসেস পালক দেখা যায় ।
  • তিমির চামড়ার নীচে পুরু চর্বিস্তরকে ব্লাবার বলে ।
  • হাঙরের আঁশ টিনয়েড় প্রকৃতির ।
  • শংকর মাছের আঁশ প্লাকয়েড প্রকৃতির ।
  • কাতলা মাছের আঁশ সাইক্লয়েড প্রকৃতির ।
  • পরিবর্তিত পরিবেশে জীবের দ্রুত অভিযােজনকে অ্যাক্লামাটাইজেশন বলে ।
  • মােলাক হরিডাস নামক মরুবাসী প্রাণীর ত্বকের সাহায্যে জল শােষণ করে ।
  • তিমি, সিল, কচছপ প্রভৃতি প্রাণীর সামনের পা নৌকার দাঁড়ের ন্যায় পাতলা, চ্যাপ্টা , মাংসল গঠন সৃষ্টি করে, যার সাহায্যে ইহারা জলে সাঁতার কাটে । একে ফ্লিপার বলে ।
  • বাদুড়, চামচিকে এবং জলজ প্রাণী আলট্রাসােনিক শব্দ সৃষ্টি করে বিশেষ জ্ঞানেন্দ্রিয়ের সাহায্যে প্রতিফলিত শব্দ তরঙ্গা গ্রহণ করে কোন বস্তুর গঠন, অবস্থান জানতে পারে । এই প্রক্রিয়াকে ইকোলােকেশন বলে ।
  • বাদুড়, চামচিকের অগ্রপদ যে পাতলা চামড়া দ্বারা গঠিত ডানার ন্যায় গঠন সৃষ্টি করে তাকে প্যাটাজিয়াম বলে ।
  • কোন বস্তু বা অন্য জীবের ন্যায় রং, গঠন সৃষ্টি করে আত্মরক্ষা করার জন্য কিছু কিছু জীব যে অভিযােজন ঘটায়, তাকে মিমিক্রি বা অনুকৃতি বলে ।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area