Ads Area


প্রাত্যহিক জীবনে জল বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Bengali class-10

 প্রাত্যহিক জীবনে জল বাংলা প্রবন্ধ রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “প্রাত্যহিক জীবনে জল”প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাত্যহিক জীবনে জল বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Bengali class-10


প্রাত্যহিক জীবনে জল বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Bengali class-10


 প্রাত্যহিক জীবনে জল


ভূমিকা :

জলের অপর নাম জীবন। মানুষ-সহ সমগ্র প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রাণপ্রবাহের অন্যতম প্রধান উপাদান হল জল। মানব শরীরের একটা বড়ো অংশ জলীয় উপাদানে গঠিত। মানবজীবনের প্রতিটি মুহূর্তে জলের অনিঃশেষ উপযোগিতা। জল ছাড়া জীবনের একটি দিনও অচল। এই কারণে জলকে জীবনের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

জলের ব্যবহার :

জল ছাড়া আমাদের জীবন একদিনও অতিবাহিত হয় না। পৃথিবীর তিন ভাগ জল ও একভাগ স্থল হলে কী হবে, জল এখন দুর্লভ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে পানীয় জলের সংকট বেড়ে চলেছে। বৃহত্তর জীবনের পাশাপাশি প্রাত্যহির প্রকৃতির জলের ব্যবহার জল ছাড়া আমাদের জীবনের একটি দিনও অতিবাহিত হয় না। পৃথিবীর তিনভাগ জল ও একভাগ স্থল হলে জীবনেও জলের অপরিহার্যতা প্রশ্নাতীত। বৃহত্তর জীবনে পানীয় জল থেকে শুরু করে কৃষিকাজ, শিল্প-উৎপাদন, ধোলাই-মোছাই, স্নান থেকে তর্পণ সব কিছুতেই জলের অনিবার্য উপযোগ। গ্রাম হোক বা শহর, কুটির হোক বা প্রাসাদ, স্থলভাগ হোক বা অন্তরীক্ষ াপতি সর্বত্রই জলের অনিবার্য উপস্থিতি। অর্থাৎ বৃহত্তর জীবনে জলের উপযোগিতা অনস্বীকার্য।

প্রাত্যহিক জীবনেও জলের নিত্য উপযোগিতা অস্বীকার করা যায় না। সকালবেলায় ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে চোখ থেকে ঘুম তাড়াতে শীতল জলের স্পর্শ কে অবহেলা করবে। তারপর মুখ ধোয়া এবং বাথরুমে জলের অপ্রতুলতা মানেই হইচই, অসন্তোষের ব্যাপার। এবার খবরের কাগজ চোখের সামনে ধরে হাতে চায়ের যে কাপটি তুলে নিই তা তো ফোটানো জলের দান। মা ততক্ষণে রান্না বসিয়েছেন। জল সেখানে অপরিহার্য।

 হাঁড়িকুড়ি, থালাবাসন পরিষ্কার জলে ধুয়ে দিয়ে গেছে কাজের মাসি। সে যত্ন করে আনাজ কেটে, মাছ কেটে জলে ধুয়ে মায়ের হাতের কাছে জুগিয়ে দিয়ে গেছে। মা জলে চাল ধুয়ে হাঁড়ির ফুটন্ত জলে ভাত চড়িয়েছেন। পাশের উনানে ছোটো ভাইয়ের জন্য জল ফোটাতে দিয়েছেন। সে ফোটানো জল ঠান্ডা হলে খাবে। ওয়াটার বটলে ওই ফোটানো জল আমি স্কুলে নিয়ে যাই। বাড়িতে অবশ্য ওয়াটার ফিলটার আছে। ফিলটারের পরিসূত জল সকলে ব্যবহার করে। আজকাল ডাক্তারবাবুরা বলেন জল থেকে নানারকম অসুখ হয়, তাই পরিপুত জল ব্যবহার করাই ভালো।

জল যে শুধু পান করার জন্য লাগে তা নয়, জল ছাড়া চা-দুধ-খাদ্যপানীয় কিছুই বানানো সম্ভব নয়। নিত্যদিন ওষুধ খেতেও জল লাগে। গ্রীষ্মের দিনে সাওয়ারে স্নান করার মজাটা ভুলি কী করে? শীতে গিজারের জলের উয় আমেজ কেই বা পছন্দ করে না? প্রত্যহের জামাকাপড় কাচার জন্য প্রচুর জল লাগে। হাত, পা ধোয়াতো আছেই।

প্রত্যহ ঘরের টেবিলের ওপর ফুলদানিতে ফুলগুলো যে টাটকা থাকে তারও কারণ তার গোড়াতে জলের ছোঁয়া। ছাদের টবে ফুলের গাছে যে সবুজের সমারোহ আর পুষ্পশোভা, তার জন্যও তো প্রতিদিন সকাল-বিকাল জল দেওয়া প্রয়োজন। জানলার কার্নিশে পাখিগুলো এসে বসলে মা তাদের ছোলা-মুড়ি-বিস্কুট আর জল দেন। বলেন প্রাণীদের সেবা করাও মানুষের ধর্ম। অতিথিকে জলদান ভারতীয় অতিথি সেবার অন্যতম অঙ্গ।

এত গেল সাধারণ গৃহস্থ ঘরের প্রাত্যহিক জীবনে জলের উপযোগিতার কথা। কিন্তু একজন কৃষকের প্রাত্যহিক জীবনে জল তার পাণের চেয়েও বেশি মূল্যবান, কারণ জলসেচ ছাড়া স্বপ্নের ফসল ফলবে না। একজন শ্রমিকের কাছেও জল অপরিহার্য, তার সঙ্গী যন্ত্রও যে জল গ্রহণ করে। একজন জেলের জীবিকার প্রধান কেন্দ্র হল জল ও জলাভূমি। একজন তাঁতির সুতো রাঙাতে জলের প্রয়োজন, কুমোরের মাটি ভেজাতে জলের প্রয়োজন। এইভাবে সমস্ত সমাজে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের প্রয়োজন মিটিয়ে চলেছে জল।

জলের অপব্যবহার :

জীবনদায়ী জলকে আমরা সযত্নে সংরক্ষণ করতে পারি না। অপচয়, অপব্যবহার করে আমরা জলসম্পদকে অমর্যাদা করছি। ঠিকমতো জল ব্যবহার করা ও করতে শেখানোর জন্য আমাদের গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। জলকে নানাভাবে দূষিত করে জলকে ব্যবহারের অযোগ্য করে তুলছি। জলকে নির্মল রাখার জন্য সার্বিক প্রয়াস প্রয়োজন। ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক বা আরও অনেক মারণ জীবাণু থাকায় তা আমাদের সুস্বাস্থ্যের সহায়ক নয়। মাটির ওপরের জলকে ব্যবহারযোগ্য করার জন্য উদ্যোগী হওয়া দরকার।

উপসংহার :

জীবনে ও প্রাত্যহিক জীবনে সবরকম জলের প্রয়োজন। কোনো জল পান করার জন্য, কোনো জল অন্য কাজে ব্যবহারের জন্য। নিত্যব্যবহার্য জলের অতিব্যবহার ও অব্যবহার রোধ করা প্রয়োজন। সামাজিক জীবনে জলাভাব যে কী ধরনের অসন্তোষের কারণ হয় তা সংবাদপত্রে রোজই আমরা দেখতে পাই। তাই জল হল আমাদের প্রাণ, জলই জীবন। আমরা সবাই মিলে যদি জলকে নির্মল রাখার প্রয়াস না নিই, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের তার মাশুল গুনতে হবে।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area