Ads Area


বনসৃজন বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Banasrjon Bengali Grammar Class-10

 বনসৃজন বাংলা প্রবন্ধ রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “বনসৃজন”প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বনসৃজন বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Banasrjon Bengali Grammar Class-10


বনসৃজন বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Banasrjon Bengali Grammar Class-10


বনসৃজল


"মরু বিজয়ের কেতন উড়াও।"


ভূমিকা :

মানুষের প্রাণশক্তির অন্যতম উৎস হল গাছ। অরণ্য মানুষকে দিয়েছে খাদ্য, সু-বাতাস, বাঁচার আশ্রয়। আদিম মানুষ একদিন অরণ্যে প্রাণের সঞ্জীবনী খুঁজে পেয়েছিল। আরণ্যক মানুষ অরণ্যকে এবং অরণ্যের সম্পদ বৃক্ষ-লতাকে দেবতা বলে পূজা করেছে এবং অরণ্য সম্পদকে ভালোবেসে রক্ষা করেছে। কিন্তু সভ্যতা বিকাশের ফলে মানুষ নির্মমভাবে অরণ্য ধ্বংস করে শহর-বসতি নির্মাণ করেছে। ফলে অরণ্য জননীর সীমন্তে আজ ধূসরতা নেমে এসেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পৃথিবীতে দূষণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। জীবনধারণ আজ কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বৃক্ষ নিধন নয়, নতুন বৃক্ষ রোপণ করাই হোক আমাদের নতুন সংকল্প বাণী।

বনসম্পদ ও বনসৃজন :

মানবসভ্যতায় বৃক্ষের প্রয়োজন অসীম। গাছ কার্বন ডাই অক্সাইড আত্মস্থ করে ফিরিয়ে দেয় প্রাণধারণের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন। মানুষের জীবনের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে মুক্ত করতে, বন্যা ও ভাঙন রোধে, নানা রোগ প্রতিরোধে, আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখতে-বনসৃজন ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। গাছ প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখে। যান্ত্রিক সভ্যতার ক্রমবিস্তারে যে-হারে অরণ্য-সংহার কার্য চলছে, তাকে প্রতিরোধের জন্য সুপরিকল্পিত উপায়ে বনসৃজন করা আবশ্যক।

অরণ্যের অবদান :

প্রাচীন ভারতে বনভূমিতে গড়ে ওঠা তপোবন ছিল আশ্রমিক শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র। জীবনদায়ী ওষুধ বলতে একদা বনের গাছগাছড়াকেই বোঝাত। বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতিতে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবর্ণনীয় সাফল্য এসেছে এ কথা ঠিক, কিন্তু অ্যালোপ্যাথিক, হোমিয়োপ্যাথিক ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ প্রস্তুতিতে বন ও বনের গাছপালা সবচেয়ে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করছে আজও।

বৃক্ষবন্দনা :

মানুষের নিকটতম প্রতিবেশী রূপে রবীন্দ্রনাথ বৃক্ষের বন্দনা করেছেন। তাঁর একান্ত কামনা-

"দাও ফিরে সে অরণ্য লহ এ নগর, 

লহ যত লৌহ, লোষ্ট্র, কাষ্ঠ ও প্রস্তর

হে নব সভ্যতা।"

বৃক্ষরোপণ :

প্রকৃতিকে শ্যামল স্নিগ্ধ জননীরূপে কল্পনা করে তাকে ভালোবেসে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আধুনিক ভারতে বৃক্ষরোপণ উৎসবের সূচনা করেন। বনসৃজন ও সংরক্ষণের রূপায়ণে ভারত সরকারও নানান পরিকল্পনা নিয়েছে। আজ দেশের সর্বত্র প্রতি বছর বাৎসরিক উৎসবের মতো 'বনসৃজন সপ্তাহ' বিপুল উৎসাহে পালিত হয়। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই মাসে ভারত সরকার প্রথম বনমহোৎসব পালন করে।

একটি গাছ-একটি প্রাণ :

সমাজ, দেশ ও দশের স্বার্থে সবুজায়ন আবশ্যক। আগামী দিনের শিশুর মুক্ত বায়ুতে শ্বাসগ্রহণের স্বার্থে বৃক্ষরোপণ অপরিহার্য। এ বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্র-শিক্ষকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। বস্তুত প্রতিটি নাগরিককেই এই দায়িত্ব নিতে হবে। একদিকে বৃক্ষ রক্ষা, অন্যদিকে বনসৃজন-এই উভয় কাজই একসাথে আমাদের করতে হবে। এটি কোনো একজন বা এক গোষ্ঠীর কাজ নয়, এটি সকলের কাজ। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে 'একটি গাছ একটি প্রাণ'-এই বোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। 

নিজেদের প্রয়োজনে ও বাঁচার তাগিদে আজ প্রত্যেককে একটি করে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। আশার কথা, দিকে দিকে সবুজায়নের জন্য সমাজভিত্তিক বনসৃজন শুরু হয়েছে। মানুষের সচেতনতার হাত ধরে দেশে আবার 'সবুজ বলাকা' পাখা মেলবে, আমাদের এই আশা অবশ্য পূর্ণ হবে। গাছের সঙ্গে মানবপ্রাণের অঙ্গাঙ্গিভাবে যোগ রয়েছে। গাছ যে অক্সিজেন দেয় তার মূল্য অপরিমেয়, এ কথা মনে রাখলে আমরা আর গাছ কাটতে পারব না। বরং উৎসাহিত হব নতুন গাছ লাগাতে। আমাদের উচিত সম্মিলিতভাবে বনসৃজনে উদ্যোগী হাওয়া।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area