Ads Area


মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব প্রবন্ধ রচনা | Effect of Environment On Human Life Essay Writing

মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব প্রবন্ধ রচনা | Effect of Environment On Human Life Essay Writing


মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব প্রবন্ধ রচনা- পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো।যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।



মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব



অনুরূপে: (১) পরিবেশ গঠনে মানবসমাজ; (২) মানুষ ও তার পরিবেশ।


ভূমিকা-


“এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি

নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।”


- কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য



মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব অপরিসীম। পরিবেশ হল মানুষকে গড়ে তোলার উপযুক্ত স্থান। এখানে মানুষ ও তার পারিপার্শ্বিক সমস্ত জগৎ একত্রে কাজ করে। শিশু তার পরিবেশের গুণে একজন বড়ো কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, উকিল, ডাক্তার, অধ্যাপক হতে পারে। আর এদের গড়ে ওঠার মূলে থাকে পরিবেশের অসামান্য ভূমিকা।



বাড়ির পরিবেশ:


একটি শিশু যদি গৃহমধ্যে মানসিক সুস্থতা এবং পরিচর্যার সঙ্গে বড়ো হতে পারে তবে আগামী দিনে সে সমস্ত বাধার প্রাচীরকে লঙ্ঘন করতে পারবে।

তবে সেখানে শিশুর পিতামাতাকে হতে হবে অত্যন্ত সজাগ, বাৎসল্যপরায়ণ এবং শিশুর চাহিদার পরিপূরক। সেইসঙ্গে একটি শিশুর ভালোমন্দ সমস্ত দিক পিতামাতাকে উপলব্ধি করতে হবে এবং শিশুকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে শিশুর ভালোলাগা এবং মন্দলাগা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।



সামাজিক পরিবেশ:



মানুষ যে সমাজে বাস করে সেই সমাজকে হতে হবে কুসংস্কারমুক্ত মানুষ্য বসবাসের উপযুক্ত সমাজ। এখানে মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে একে অপরকে সাহায্য করবে, একে অপরের। অন্তরঙ্গ বন্ধু কিংবা সহৃদয় সামাজিক মানুষের মতো ভালোভাবে মিশবে। মানুষ মানুষের বিপদের দিনে একে অপরের পাশে দাঁড়াবে।

তা না হলে সমাজে মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধন থাকাটা অস্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে উঠত। তাই কী গ্রামে, কী শহরে সর্বত্রই মানুষকে সামাজিক পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে হবে।


মানবজীবনে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব:


আদিমকালে মানুষ ছিল সম্পূর্ণভাবে প্রকৃতিনির্ভর। বর্তমানের মানুষ ততখানি প্রকৃতিনির্ভর না হলেও প্রাকৃতিক পরিবেশ তথা ভৌগোলিক অবস্থানকে তাঁরা এড়িয়ে যেতে পারেন না। ফলে মানুষের জীবন ও চরিত্রে আঞ্চলিক প্রভাব প্রকট হয়ে ওঠে।

মৌসুমি অঞ্চলে পলিমাটি ও প্রচুর বৃষ্টির আর্দ্রতার সঙ্গে বাঙালি চরিত্রের কোমলতা সঠিক সংগতি রক্ষা করেই চলে। বাংলার জলবায়ু ও ভূপ্রকৃতি বাঙালিকে স্বভাবতই স্নেহকাতর, ভাবপ্রবণ ও রসচল করেছে। আবার পার্বত্য অঞ্চল তিব্বত নেপালের অধিবাসীদের করেছে পর্বতের মতোই গম্ভীর, হাস্যহীন ও সংকল্পে অনড়।

নদী বা সমুদ্র অঞ্চলের মানুষেরা হয় নৌ-চালনায় নিপুণ, সাহসী ও কর্মঠ। ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী জাতিরা মনোরম জলবায়ুর জন্যই খোশমেজাজি, চঞ্চল স্বভাবের। সমভূমি অঞ্চলে উর্বর জমি কৃষিকার্যের উপযোগী- তাই এসব অঞ্চলের প্রধান জীবিকা হল কৃষিকার্য।



মানবজীবনে সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রভাব:



মানবজীবনে সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রভাবও কম নয়। মানবজীবনে সাংস্কৃতিক বিকাশ না ঘটলে সমাজে মানুষের কোনো বিশেষ ভূমিকা থাকে না। সমাজের অভিজ্ঞতা, সামাজিক মানুষ যখন কবিতা, গান বা নাটকে রূপদান করে বাস্তব অভিজ্ঞতার দর্পণে মানুষের চোখের সামনে তুলে ধরে তখন তা আমাদের সামনে প্রত্যক্ষভাবে ভেসে ওঠে।

রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দ, শরৎচন্দ্র, গান্ধিজি, ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষাণ প্রমুখ মানুষের আদর্শ, তাঁদের জীবনধারা, তাঁদের জীবন ও বাণীর তাৎপর্য অনুধাবনে আমরা আমাদের জীবনে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল রচনা করতে পারি।

সংস্কৃতি হল জাতির সামগ্রিক পরিচয়পত্র। নৃত্যে-শিল্পে-সাহিত্যে-সংগীতে-ভাস্কর্যে স্থাপত্যে-আচার-অনুষ্ঠানে, ধর্মীয় সহিষ্কৃতায়, দার্শনিক ভাবনায় যে গৌরব প্রকাশ পায়- তা-ই আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চা।সাংস্কৃতিক পরিবেশ থাকলে মানুষের সহানুভূতি মৈত্রীবোধ, পরমতসহিঞ্চুতা এবং সমন্বয়ী চেতনাবোধ জাগে। তাই সাংস্কৃতিক পরিবেশ হল জাতির সর্বাঙ্গীণ উন্নতির চরমতম পরিণাম।



পরিবেশ সৃষ্টিতে আমাদের দায়িত্ব:



দেশের বুকে এমন একটা সুন্দর সুস্থ পরিবেশ গড়ে উঠুক, যে পরিবেশে মানুষ লাভ করবে সুশিক্ষা, স্বচ্ছলতা এবং আনন্দোজ্জ্বল পরমায়ু। দেশের শিক্ষিত নাগরিকগণ, ধর্মসংস্কারকগণ, মানবপ্রেমীগণ ও দেশীয়নেতৃবৃন্দ উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশকে অশিক্ষা, দারিদ্র্য, গোঁড়ামি ও সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করতে পারেন।



উপসংহার:



প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে যে বিষাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে সে পরিবেশকে দূষণ মুক্ত করার ব্যাপক প্রয়াস শুরু হয়েছে পৃথিবী জুড়ে। কিন্তু শুধু প্রাকৃতিক পরিবেশকে দূষণ মুক্ত করলে হবে না, চাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশেরও শুদ্ধি। প্রাকৃতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশকে সুশৃঙ্খলভাবে গড়তে হলে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

সরকারসহ সমাজের উচ্চ শ্রেণির নেতৃবৃন্দ এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সহৃদয় মানুষকে সেবকের ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। তবেই মানবজীবনে পরিবেশের ভূমিকা সুদূরপ্রসারী হবে।



আরও পড়ুন-

🔘 Join Our Telegram Chanel - Click Here 🔘


Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন। যদি কোন ভুল থেকে থাকে তবে তা Typing mistake এর জন্য। আমাদের comment করে জানান আমরা তা সংশোধন করে দেবার চেষ্টা করবো।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area